ভারতের বিমান হামলার প্রতিক্রিয়ায় বুধবার পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি এক জরুরি বৈঠকে ভারতের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থগিত, পাঞ্জাবের ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক হ্রাস করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়া, ভারত কোনোভাবে পাকিস্তানের ‘পানির অধিকারে’ হস্তক্ষেপ করলে তা ‘যুদ্ধ ঘোষণা’ হিসেবে বিবেচিত হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে পাকিস্তান।
প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সভাপতিত্বে ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে শীর্ষ সামরিক ও বেসামরিক নেতারা অংশ নেন। পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা এপিপির খবরে বলা হয়, ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
এর আগে, ২৪ এপ্রিল পাহেলগামে হামলায় ২৬ জনকে নিহতের জেরে ভারত ‘সিন্ধু পানি চুক্তি’ স্থগিত করলে জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি প্রথম দফায় বৈঠক করে।
ওই বৈঠকে পাকিস্তানের শীর্ষ নিরাপত্তা মহল জানান, ‘সিন্ধু চুক্তি’ একটি বাধ্যতামূলক আন্তর্জাতিক চুক্তি এবং পানি পাকিস্তানের জন্য একটি ‘জীবন-মরণ ইস্যু’। ২৪ কোটির বেশি মানুষের জন্য ওই পানি, যা একটি জাতীয় স্বার্থ। আর এই স্বার্থ রক্ষা করা হবে যে কোনো মূল্যে।
পরে এক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ বলেন, ‘শত্রু পাকিস্তানে কাপুরুষোচিত হামলা চালিয়েছে, এর যোগ্য জবাব দেওয়ার পূর্ণ অধিকার আমাদের আছে।’
বুধবার রাতে ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় পাকিস্তানে অন্তত ২৬ ‘বেসামরিক নাগরিক’ নিহত এবং আরও ৪৬ জন আহত হয়েছেন। পাক সেনাবাহিনীর আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী এ দিন দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছেন।
তবে ভারতের প্রভাবশালী নয়াদিল্লি টেলিভিশন (এনডিটি) দাবি করেছে, ভারতের ওই হামলায় নিহত হয়েছে ৭০ জন। এদিন দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে বেসামরিক নাগরিকদের দেওয়া হচ্ছে ‘যুদ্ধ মহড়ার’ প্রশিক্ষণ। এই মহড়ার মধ্যে বিমান হামলাকে দেওয়া হচ্ছে বিশেষ গুরুত্ব।
গত মাসে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পাহেলগামে এক বন্দুক হামলায় ২৬ জন নিহতের জেরে ভারত সরকার পাকিস্তানে ওই হামলা চালাল। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তান-ভিত্তিক ইসলামি জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোকেই দায়ী করে আসছে। পাকিস্তান অবশ্য এসব অভিযোগ নাকচ করেছে এবং পাল্টা অভিযোগ করে বলেছে, ভারতই হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এ প্রেক্ষাপটে বুধবার প্রতিবেশী দুইদেশ সরাসরি সংঘাতে জড়াল।