রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) প্রতিষ্ঠার ১৭ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও কার্যকর হয়নি ছাত্র সংসদ। অথচ ‘কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ফি’ নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এরইমধ্যে প্রায় ৪৫ লাখ টাকা আদায় করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে এই অর্থ ব্যয়ের কোনো স্বচ্ছতা বা জবাবদিহি না থাকায় ক্ষোভ জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
বার্তা সংস্থা ইউএনবি’র খবরে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ২০০৮ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত প্রতি শিক্ষার্থীর থেকে ছাত্র সংসদের নামে ২০০ টাকা হারে ফি আদায় করা হয়।
এতে ১৯ হাজার ৬৬৭ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৩৯ লাখ ৩৩ হাজার ৪০০ টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘জেনারেল ফান্ডে’ জমা করা হয়। অভিযোগ উঠেছে, কোনো ছাত্র সংসদ গঠিত না হলেও এ অর্থ বিভিন্ন সময়ে ইচ্ছেমতো খরচ করেছে তৎকালীন প্রশাসন।
তবে বেরোবি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২০২৩-২৪ ও ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ২ হাজার ৮০০ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে আদায়কৃত ৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা আলাদা একটি অ্যাকাউন্টে জমা রাখা হয়েছে।
অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এত বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয় আইনে ছাত্র সংসদের কোনো উল্লেখ না থাকায় বিষয়টি উপেক্ষতি ছিল। শিক্ষার্থীদের নেতৃত্ব তৈরি হওয়ার জায়গা কৌশলে বন্ধ করে রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু ছাত্র সংসদের নামে হাতিয়ে নিয়েছে লাখ লাখ টাকা।
ক্ষুব্ধ এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘১৭ বছরেও কোনো ছাত্র সংসদ নেই। অথচ ছাত্র সংসদের নামে কোটি টাকা ওঠানো হয়েছে। আমরা জানি না সেই টাকা কোথায় গেল। পরিকল্পিতভাবে আমাদের নেতৃত্ব ভেঙে দেওয়া হয়েছে।’
বেরোবি প্রশাসন বলছে, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর ১০৮তম সিন্ডিকেট সভায় ‘কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ’ গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। গত ১৫ মে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে গঠনতন্ত্র পাঠানোর পর ইউজিসির সদস্য মোহাম্মদ তানজীম উদ্দিন খানের নেতৃত্বে সাত সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর তা ‘ছাত্র সংসদ’ আইন হিসেবে প্রকাশ পাবে।
এদিকে, রোকেয়া বিশ্ববিদ্য্যালয় ছাত্র সংসদ (বেরোবিকসু) নির্বাচনের দাবিতে ৫৯ ঘন্টার মাথায় আমরণ অনশন প্রত্যাহার করেছেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) ও শিক্ষকদের প্রতিশ্রুতিতে তারা অনশন ভঙ্গ করেন। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৬ থেকে ৩০ অক্টোবরের মধ্যে যে কোন দিন ছাত্র সংসদ নির্বাচন হবে।
মঙ্গলবার রাত সোয়া ১০ টায় অডিও কলে অনশনরত শিক্ষার্থীদের সাথে যুক্ত হন বেরোবিকসু খসরা আইন চুড়ান্ত কমিটির প্রধান ইউজিসি সদস্য প্রফেসর তানজিম উদ্দিন খান।