‘বুয়েটসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে প্রতিবছর হাজার হাজার প্রকৌশলী বের হওয়ার পরেও বিদেশ থেকে লোক এনে সড়ক-রেলপথ বানাতে হয়। এটি আমাদের জন্য লজ্জার’- এমন মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
রোববার সকালে গাজীপুরে ‘ঢাকা বাইপাস এক্সপ্রেসওয়ের’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
‘দেশে দক্ষ প্রকৌশলী না থাকায় বিদেশিদের ওপর নির্ভরতা বাড়ছে,’ — এ কথা উল্লেখ করে উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘দেশের সম্পদ আমাদেরই রক্ষা করতে হবে। কাজেই বিদেশি নির্ভরতা কমিয়ে দেশে দক্ষ প্রকৌশলী তৈরির চেষ্টা করতে হবে।’
ঢাকা বাইপাস এক্সপ্রেসওয়ে রাজধানীকে বাইপাস করে চট্টগ্রামসহ উত্তরবঙ্গে যাতায়াত আরও সহজ করবে বলেও জানান মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
সড়কটি রাজধানীর ৩০০ ফিটে পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে কাঞ্চন ইন্টারচেঞ্জের মাধ্যমে যুক্ত হবে। এতে ঢাকায় প্রবেশ না করেই পণ্যবাহী যানবাহন কম সময়ে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ময়মনসিংহ, রংপুর ও রাজশাহীতে যাতায়াত করতে পারবে। সেই সঙ্গে রাজধানীর যানজট ও দুর্ঘটনার ঝুঁকিও হ্রাস পাবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

প্রথম ধাপে গাজীপুরের ভোগড়া থেকে নারায়ণগঞ্জের মদনপুর পর্যন্ত ৪৮ কিলোমিটার ও ঢাকা বাইপাস সড়কের ১৮ কিলোমিটার অংশের উদ্বোধন করেন উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান। এখন পর্যন্ত প্রকল্পের প্রায় ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে জানিয়ে তিনি আশা করেন, পুরো এক্সপ্রেসওয়ের কাজ ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে শেষ হবে।
উদ্বোধন করা ওই ১৮ কিলোমিটার সড়কে আংশিকভাবে টোল আদায় শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। নিরাপত্তা ও গতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এক্সপ্রেসওয়েতে সিএনজি অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একই সঙ্গে এই অংশে কোনো ইউটার্ন রাখা হয়নি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর এক্সপ্রেসওয়েটি চলাচলের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেওয়া হয়। এ সময় উপদেষ্টা বলেন, ‘সেতু মন্ত্রণালয় একটি মাল্টিমডেল ট্রান্সপোর্ট প্ল্যান হাতে নিয়েছে। সেখানে সব পথকে আমরা একত্র করে দেখব। সড়ক, রেল, নৌপথ যেখানে যেটি উপযুক্ত সেখানে সেটি গুরুত্ব দেওয়া হবে।’
সড়ক কিংবা রেলপথ নির্মাণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ একটি ব্যয়বহুল প্রক্রিয়া উল্লেখ করে সেতু উপদেষ্টা বলেন, ‘এখান থেকে বেরিয়ে অন্য যোগাযোগমাধ্যমে আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে।’
মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান আরও বলেন, ‘আশপাশের দেশের তুলনায় আমাদের সড়কের নির্মাণ ব্যয় বেশি। এ ছাড়া এটি দুর্নীতির একটি বড় ক্ষেত্র। এগুলো কমানো গেলে রাস্তায় নির্মাণ ব্যয় ২০-৩০ শতাংশ কমানো সম্ভব।’