বুকের দুধ পানের হার কমছে, বাড়ছে শিশুর স্বাস্থ্যঝুঁকি

টাইমস রিপোর্ট
2 Min Read
বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ ২০২৫’ উপলক্ষে বিএনএফ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন। ছবি: টাইমস

দেশে নবজাতক থেকে ছয় মাস বয়সের শিশুদের বুকের দুধ পানের হার কমছে। সাম্প্রতিক এক গবেষণার বরাত দিয়ে বাংলাদেশ নিওনেটাল ফোরাম (বিএনএফ) জানিয়েছে, জন্মের প্রথম ছয় মাস পর্যন্ত মায়ের বুকের দুধ পাচ্ছে গড়ে ৪৯ শতাংশ শিশু। যা শিশুর স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াচ্ছে।

বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ ২০২৫’ উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

বিএনএফ এর মহাসচিব অধ্যাপক মুজিবুর রহমান জানান, বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক অ্যান্ড হেলথ সার্ভের সবশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০১১ সালে যেখানে ছয় মাস বয়স পর্যন্ত একচেটিয়াভাবে মায়ের দুধ পান করত প্রায় ৬৪ শতাংশ শিশু, সেখানে ২০২২ সালে এ হার নেমে আসে ৫৫ শতাংশে।  সম্প্রতি আট বিভাগের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, জন্মের প্রথম ছয় মাস পর্যন্ত মায়ের বুকের দুধ পায় গড়ে ৪৯ শতাংশ শিশু।

তিনি বলেন, ‘একচেটিয়াভাবে মায়ের দুধ পান করানো কমে গেলে শিশুর অপুষ্টি, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। বিশেষ করে জন্মের পর প্রথম এক ঘণ্টার মধ্যে শিশুকে স্তন্যপান না করালে মৃত্যুঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়।’

বুকের দুধ পানের পরিমাণ কমে যাওয়ার পেছনে কারণ হিসেবে কুসংস্কার, কর্মজীবী মায়েদের জন্য সুবিধা না থাকা, বিকল্প শিশু খাদ্যের অবাধ বিপণন এবং আইনের কার্যকর প্রয়োগের ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

বিএনএফের উপদেষ্টা অধ্যাপক সুফিয়া খাতুন বলেন, ‘মাতৃদুগ্ধপানের হার বাড়াতে হলে বেসরকারি খাতে অন্তত ৬ মাস মাতৃত্বকালীন ছুটি নিশ্চিত করা জরুরি। এছাড়া সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে স্তন্যদান কর্নার স্থাপন, শিশুখাদ্য বিজ্ঞাপন নিয়ন্ত্রণে কড়া আইন প্রয়োগ, গর্ভাবস্থা থেকেই মায়েদের পুষ্টি ও স্তন্যপান বিষয়ে প্রশিক্ষণ এবং স্তন্যপানবান্ধব কর্মক্ষেত্র নিশ্চিত করা জরুরি।’

মাতৃদুগ্ধের বিকল্প হিসেবে কৌটাজাত দুধ খাওয়ানোর জন্য জন্য উৎসাহ দেওয়ার অপরাধে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইনে মামলা ও সাজা দেওয়ার বিধান থাকলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন বক্তারা।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খুরশিদ আলম, দৈনিক যায়যায়দিনের বিশেষ প্রতিনিধি এ কে এম সাখাওয়াত হোসেন, বিএনএফের সভাপতি অধ্যাপক মো. মাহবুবুল হক, প্রাক্তন সভাপতি অধ্যাপক মো. মনির হোসেনসহ অন্যরা।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *