ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে জঙ্গি হামলায় ‘সন্দেহভাজন’ আদিল হোসেন ঠোকের ও আসিফ শেখের বাড়ি বিস্ফোরণে উড়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার রাতে তাদের বাড়ি দুটি পৃথক বিস্ফোরণে ধ্বংস হয় বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
একাধিক ভারতীয় গণমাধ্যম দাবি করেছে, আদিল হোসেন ও আসিফ শেখ পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈয়বার সদস্য। তাদের বাড়ি ধ্বংসের কাজে অংশ নিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী ও জম্মু-কাশ্মীরের প্রশাসন।
অনেকে দাবি করেছেন, বাড়ি দুটিতে বিস্ফোরকের মজুদ ছিল। অভিযানকালে সেখানে বিস্ফোরণ হয়।
আনন্দবাজার বলছে, আদিলের বাড়িটি বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বিস্ফোরণের সাহায্যে উড়িয়ে দেওয়া হয়। আর আসিফের বাড়িটি বুলডোজারে ভেঙে ফেলা হয় শুক্রবার ভোরে।
হিন্দুস্তান টাইমস-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসিফ শেখের বাড়িতে তল্লাশি চালানোর সময় একটি সন্দেহজনক বাক্স পাওয়া যায়। ওই বাক্স থেকে তার বেরিয়ে ছিল। সেটি ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইসের অংশ বলে মনে করা হচ্ছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং টিম পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর পর বাক্সটি বিস্ফোরিত হয়। এতে কেউ হতাহত হয়নি। তবে আসিফের বাড়ির একাংশ উড়ে যায়।
নিরাপত্তা বাহিনীর বরাত দিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম জানায়, আদিল ও আসিফ পেহেলগামে মঙ্গলবারের জঙ্গি হামলায় জড়িত ছিলেন। আদিলের বাড়ি অনন্তনাগ জেলায়। আর আসিফ পুলওয়ামার এলাকার বাসিন্দা। আসিফ হামলার ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকলেও ঘটনাস্থলে তার উপস্থিতি নিশ্চিত করা যায়নি। তবে আদিল ঘটনাস্থলে ছিলেন বলে দাবি করা হচ্ছে।

অনন্তনাগের পুলিশ পাহেলগামে হামলায় জড়িত সন্দেহে বৃহস্পতিবার যে তিনজনের স্কেচ প্রকাশ করেছে, সেখানে আদিলের স্কেচ আছে। সন্দেহভাজন অন্য দুজন পাকিস্তানের নাগরিক বলে জানিয়েছে পুলিশ। এদের ধরতে তথ্য চেয়ে ২০ লাখ রুপি পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়েছে।
ভারতীয় পুলিশ সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে পাকিস্তানের নাগরিক হিসেবে দুই হামলাকারীর নাম প্রকাশ করেছে। তারা হলেন- হাশিম মুসা ওরফে সুলেমান এবং মোহাম্মদ আলি ওরফে তালহা ভাই। তারা জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈয়বার সদস্য বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বৃহস্পতিবার বিহারে এক জনসভায় বলেছেন, ‘দুনিয়ার শেষ প্রান্তে গিয়েও হামলাকারীদের খুঁজে বের করে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।’
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) ভারতের নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পাহেলগামে এক সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে ২৫ জন ভারতীয় ও একজন নেপালি নাগরিক বলে জানা গেছে। বেসামরিক লোকজনের ওপর কাশ্মীরে এমন প্রাণঘাতী হামলা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেখা যায়নি।