লাহোর সিটি ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন মাঠে অনন্য রেকর্ড গড়ে ওয়ানডে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের যাত্রা শুরু করল বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার থাইল্যান্ডকে ১৭৮ রানে বিধ্বস্ত করে নারী ক্রিকেট দল গড়েছে অনেকগুলো রেকর্ড। এর মাধ্যমে বিশ্বকাপে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা করে নেওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে নিগার সুলতানার দল।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশ শুরুতেই ইশমা তানজিমের উইকেট হারায়। এরপরই শতরানের জুটি গড়েন ফারজানা ও শারমিন। ফারজানা ৭৫ বলে ৫০ ছুঁয়ে বেশি দূর যেতে পারেননি, তবে ওয়ানডেতে ১৪তম ফিফটি করে বিদায় নেন তিনি। শারমিন ফিফটি করেন ৭৪ বলে। জোড়া ফিফটির মতো জোড়া সেঞ্চুরির দেখাও পেতে পারত বাংলাদেশ।
ইনিংসের শেষ ওভারে শতক থেকে ৮ রান দূরে ছিলেন শারমিন। নিগারের বাকি ছিল ৫ রান। ফিল্ডারের ভুলে পাওয়া বাউন্ডারিতে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি পেয়েছেন নিগার। কিন্তু দুই বল স্ট্রাইক পেয়ে দুই রানের বেশি নিতে পারেননি শারমিন। ফলে ১২৬ বল খেলে ৯৪ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি করা বাংলাদেশের দ্বিতীয় ব্যাটার নিগার। আগে দুটি সেঞ্চুরি করেছেন ফারজানা। এদিন নিগার ৮০ বলের ইনিংসে ১৫ চারের সঙ্গে ১টি ছক্কা মারেন। ওয়ানডেতে এক ইনিংসে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ বাউন্ডারির রেকর্ড এটি।
৭৮ বলে সেঞ্চুরি ছুঁয়ে দেশের হয়ে দ্রুততম শতরানের রেকর্ড গড়ে ১০১ রানের ইনিংস খেলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নিগার সুলতানা।
ব্যাটিংয়ে এরকম একগাদা রেকর্ড গড়ে ২৭১ রান তোলে বাংলাদেশ। তৃতীয় উইকেটে নিগার ও শারমিন মিলে গড়েন ১৫২ রানের জুটি। এই সংস্করণে যে কোনো উইকেটে এটিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জুটি। গত ডিসেম্বরে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ফারজানা ও শারমিনের ১৪৩ রানের জুটি ছিল আগের রেকর্ড। নিগার, শারমিনের পাশাপাশি ফিফটি করেন অভিজ্ঞ ব্যাটার ফারজানা হক। এক ইনিংসে বাংলাদেশের তিন ব্যাটারের ফিফটির ঘটনাও এটিই প্রথম।
ফারজানার সঙ্গে শারমিনের দ্বিতীয় উইকেট জুটির সংগ্রহ ১০৪ রান। একই ওয়ানডেতে বাংলাদেশের শতরানের দুটি জুটির প্রথম নজিরও এটি।
আবার বোলিংয়ে দারুন দাপট দেখিয়ে গড়ে নতুন রেকর্ড। দুই স্পিনার ফাহিমা খাতুন ও জান্নাতুল ফেরদৌস সুমনার দারুণ বোলিংয়ে মাত্র ৯৩ রানে গুটিয়ে যায় থাইল্যান্ড। ওয়ানডেতে এটিই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জয়। গত নভেম্বরের আয়ারল্যান্ডকে ১৫৪ রানে হারিয়েছিল তারা। ম্যাচে ৫টি করে উইকেট নেন ফাহিমা ও সুমনা। নারী ওয়ানডের ইতিহাসে এক ইনিংসে দুই বোলারের ৫ উইকেট নেওয়ার প্রথম কীর্তি এটি।
প্রায় সাত বছর বিরতির পর ওয়ানডে খেলতে নামা সুমনা ৫ উইকেট নিতে খরচ করেন মাত্র ৭ রান। তবে ফাহিমা ৫ উইকেট নিতে খরচ করেন ২১ রান। তাদের আগে ওয়ানডেতে বাংলদেশের হয়ে ৫ উইকেট পাওয়া ক্রিকেটার ছিলেন খাদিজাতুল কুবরা ও নাহিদা আক্তার।
বড় রান তাড়া করতে নেমে থাইল্যান্ড উদ্বোধনী জুটিতে করে ৩৮ রান। কিন্তু নবম ওভারের পর আর ম্যাচ তাদের হাতে থাকেনি। দুই প্রান্ত থেকে একযোগে স্পিন ভেলকি দেখান ফাহিমা ও সুমনা। দীর্ঘ বিরতির পর ম্যাচে ফেরা সুমনা একপর্যায়ে মাত্র ১ রান খরচে ৫ উইকেটের মালিক হয়ে যান। পরে অবশ্য তিনি আরও ৬ রান খরচ করে ফেলেন।
আলোচিত এই খেলায় প্লেয়ার অব দা ম্যাচ হয়েছেন অধিনায়ক নিগার সুলতানা।
দ্বিতীয় ম্যাচে লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে রোববার আয়ারল্যান্ডের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।