বিমানের দুই কেবিন ক্রুকে দায়িত্ব থেকে সরানোর নেপথ্যে

টাইমস রিপোর্ট
3 Min Read
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজ। ছবি: বিমানের ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া লন্ডন থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি নিয়মিত ফ্লাইটে ঢাকা ফিরবেন বলে নির্ধারিত ছিল। সেই ফ্লাইটের দুজন কেবিন ক্রুকে শেষ মূহুর্তে বাদ দেয়ার ঘটনা নিয়ে এখন চলছে নানা গুঞ্জন।

বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, শেষ মুহূর্তে কাতারের রয়েল এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা হওয়ায় খালেদা জিয়া তাতেই দেশে ফিরবেন। বিমানের নিয়মিত ফ্লাইটে তিনি আসছেন না।

বিমানের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন, লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দর থেকে রোববার ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বিজি ২০২ ফ্লাইট। এ ফ্লাইটের দুজন ক্রুকে শেষ মুহূর্তে দায়িত্ব থেকে সরানো হয়েছে। এ ফ্লাইটেই খালেদা জিয়ার ফেরার কথা ছিল।

শুক্রবার গভীররাতের এক সিদ্ধান্তে এই ফ্লাইটের দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রাখা হয়েছে ফ্লাইট পার্সার আল কুবরুন নাহার কসমিক ও জুনিয়র পার্সার কামরুল ইসলাম বিপনকে। মূলত খালেদা জিয়ার মতো ভিভিআইপি যাত্রীর নিরাপত্তা ইস্যুতে গোয়েন্দা প্রতিবেদন আমলে নিয়ে এ সিদ্ধান্ত হয়।

বিমানের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) বোসরা ইসলাম এ বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘যেকোনো ফ্লাইটে কাউকে ডিউটি না দেওয়া কিংবা রিসিডিউল হওয়া স্বাভাবিক ঘটনা। এমন ঘটনা নিয়মিতই ঘটে। গোয়েন্দা প্রতিবেদনে অনেক সময় কাউকে সরানোর সুপারিশ আসে। সে অনুযায়ী বিমান ব্যবস্থা নেয়। তবে এ দুজনের শিডিউল কেন পরিবর্তন হয়েছে, তা আমার জানা নেই। আমি ফ্লাইট সার্ভিস বিভাগের ডিজিএমকে ফোন করেছিলাম, তিনি বলতে পারেননি।’

বিমান সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার স্বাভাবিক নিয়মে ফ্লাইট সার্ভিস বিভাগ এ ফ্লাইটের চার কেবিন ক্রুর নাম চূড়ান্ত করে। তারা হলেন- বিমানের চিফ পার্সার নিশি, ফ্লাইট পার্সার আল কুবরুন নাহার কসমিক, ফ্লাইট পার্সার মো. কামরুল ইসলাম বিপন ও জুনিয়র পার্সার রিফাজ। এরপর রাতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে কর্মকর্তারা জরুরিভিত্তিতে সিদ্ধান্ত বদল করেন। কসমিক ও বিপোনকে সরিয়ে সেখানে দায়িত্ব দেওয়া হয় ফ্লাইট পার্সার ডিউক ও ফ্লাইট স্টুয়ার্ডেস আনহারা মারজানকে।

বিমানের এক কর্মকর্তা জানান, যে দুজনকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে তাদের রাজনৈতিক সংশ্লিস্টতা নিয়ে গোয়েন্দারা স্পর্শকাতর তথ্য দিয়েছেন। শেখ রেহানার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ফ্লাইট পার্সার আল কুবরুন নাহার কসমিক। তিনি রেহানার সফরের সময় একাধিক ফ্লাইট পরিচালনা করেছেন। বিগত সরকারের সময়ে তিনি একাধিকবার শাস্তিমূলকভাবে গ্রাউন্ডেড হওয়ার পরও বিশেষ তদবিরে দায়িত্বে ফিরে এসেছেন।

জুনিয়র পার্সার কামরুল ইসলাম বিপন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে সরাসরি অংশ নিতেন। তিনি সহকর্মীদের মাঝে আওয়ামীপন্থী হিসেবেই পরিচিত। এসব নিয়ে আগে প্রশ্ন না উঠলেও খালেদা জিয়ার ফ্লাইটে দায়িত্ব পালনের তালিকায় তাদের নাম দেখে গোয়েন্দারা আপত্তি তোলেন। মূলত এ দুজনকে দায়িত্ব থেকে সরানো হয়েছে ‘সর্তকতামূলক’ ব্যবস্থা হিসেবে।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *