শিক্ষাসচিব সিদ্দিক জুবায়েরকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। আন্দোনরত শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।
প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর মঙ্গলবার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি গণমাধ্যমে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে শিক্ষাসচিবকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বাকি দাবিগুলো বিশ্লেষণে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে।’
একই ধরনের বার্তা দিয়ে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ফেসবুকে লিখেছেন, ‘মাইলস্টোন ট্রাজেডির পূর্ণাঙ্গ তদন্তে শীঘ্রই কমিটি গঠিত হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবিকে সমন্বয় করে তদন্ত কমিটি গঠিত হবে। ইতোমধ্যে শিক্ষাসচিবকে অপসারণ করা হয়েছে। ন্যায্য যেকোন দাবি মানতে সরকার দায়বদ্ধ।’
রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে হতাহতের ঘটনায় মঙ্গলবারের এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিতের ঘোষণা আসে গভীর রাতে। অনেক শিক্ষার্থীর কাছে সেই খবর না পৌঁছানোয় কেন্দ্রে গিয়ে ফিরে আসতে হয় তাদের।
শিক্ষা উপদেষ্টার বরাতে তথ্য উপদেষ্টা সোমবার গভীর রাতে পরীক্ষা স্থগিতের বিষয়টি ফেসবুকে জানান। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসে অনেক পরে। সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা ক্ষুদ্ধ হন। সকালে শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার এবং শিক্ষাসচিব সিদ্দিক জুবায়েরকে অপসারণের দাবিতে আন্দোলনের ঘোষণা দেন বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার দুপুরেই ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ঘেরাও করতে যায় শিক্ষার্থীরা। দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিন্ন দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামেন।
ঢাকায় বেলা দেড়টার দিকে শিক্ষার্থীরা সচিবালয়ের সামনে জড়ো হন। সচিবালয়ের সব ফটক বন্ধ করে দেওয়া হলে শিক্ষার্থীরা ক্ষুদ্ধ হন। এক পর্যায়ে তারা সচিবালয়ের গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়লে পুলিশ বাধা দেয়। লাঠিচার্জ ও টিয়ারশেল ছুড়ে শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দেওয়া হলেও পরিস্থিতি শান্ত হয়নি।
পরে জিরো পয়েন্টে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিলে সেখানে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়।
এর আগে বেলা পৌনে ১০টার দিকে উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ পরিদর্শনে গিয়ে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এবং শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার। শিক্ষার্থীরা ছয় দফা দাবি তুলে তাদের পাঁচ ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন। তাদের দেখে শিক্ষার্থীরা ‘ভুয়া, ভুয়া’ স্লোগান দেন। এক পর্যায়ে আইন উপদেষ্টা সব দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলেও বিক্ষোভ চলতে থাকে।
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে সোমবার দুপুরে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। এতে ৩১ জনের নিহতের তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। বিভিন্ন হাসপাতালে ১৬৫ জন চিকিৎসাধীন আছে বলে জানা গেছে।