বাংলাদেশে বিনিয়োগ অব্যাহত রাখবে চীন

টাইমস রিপোর্ট
3 Min Read

অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন এবং জনগণের জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রাখার লক্ষ্যে বাংলাদেশে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা জোরদারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে চীন।

বুধবার ঢাকায় চাইনিজ এন্টারপ্রাইজ অ্যাসোসিয়েশন ইন বাংলাদেশ (সিইএবি) আয়োজিত ‘চীন–বাংলাদেশ শিল্প ও সরবরাহ চেইন সহযোগিতা’ শীর্ষক সেমিনারে অংশ নিয়ে রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, ‘আমরা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়ে রয়েছি। অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও তিন দেশের জনগণের জীবনমান উন্নয়নে পারস্পরিক সহযোগিতার সুযোগ এখন অনেক বেশি।’

সামনে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনে যেই ক্ষমতায় আসুক না কেন তার সঙ্গে কাজ করবে চীন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে কে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তা বড় কথা নয়- চীন সহযোগিতা বাড়াবে।দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এগিয়ে নিতে, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) দ্রুত চূড়ান্ত করতে এবং বিনিয়োগ চুক্তি হালনাগাদ করতে বেইজিং বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে আগ্রহী।’

ইয়াও ওয়েন বলেন, টেকসই বিনিয়োগ পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রাতিষ্ঠানিক সুরক্ষা দরকার এবং চীনা বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জনে বাংলাদেশকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। আমরা আন্তরিকভাবে আশা করি, আমাদের বাংলাদেশি বন্ধুদের এটি গুরুত্ব সহকারে নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

বাংলাদেশ, চীন ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্প্রতি কুনমিংয়ে অনুষ্ঠিত ত্রিপক্ষীয় বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, তিন দেশ ইতিমধ্যে শিল্প, বাণিজ্য, শিক্ষা, পরিবেশ সুরক্ষা ও পানিসম্পদসহ ১২টি খাতে সহযোগিতার বিষয় চিহ্নিত করেছে এবং এগুলোর বাস্তবায়নে যৌথভাবে কাজ করছে।

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সহযোগিতার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ উন্মুক্ত, স্বচ্ছ এবং পারস্পরিক আস্থার ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে। এটি কোনো তৃতীয় দেশকে লক্ষ্য করে নয়।’

‘চীন–বাংলাদেশ শিল্প ও সরবরাহ চেইন সহযোগিতা’ শীর্ষক সেমিনার। ছবি: বাসস

সেমিনারে ‘সিইএবি ইন্ডাস্ট্রি রিপোর্ট’ প্রকাশ করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন, সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশ-চীনের ব্যবসায়ী নেতারা।

রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন জানান, ১৯ জুন চীন-দক্ষিণ এশিয়া এক্সপো’র ৯তম আসর ও সহযোগিতা বৈঠকের ৬ষ্ঠ আসরের ফাঁকে কুনমিংয়ে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠক ছিল একটি ‘অনানুষ্ঠানিক ত্রিপক্ষীয় বৈঠক’। সেখানে অবকাঠামো, সংযোগ, বাণিজ্য, স্বাস্থ্যসেবা, কৃষি, তথ্যপ্রযুক্তি, সামুদ্রিক বিষয়, দুর্যোগ প্রস্তুতি ও জলবায়ু পরিবর্তনসহ একাধিক খাতে সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়।

তবে এ বৈঠক নিয়ে সম্প্রতি কিছু গুজব ছড়িয়ে পড়ায় ২৬ জুন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, ‘এটি কোনো নতুন জোট গঠনের সূচনা নয়। আমরা কোনো জোট গঠন করছি না। এটি ছিল সরকারি পর্যায়ের বৈঠক, রাজনৈতিক নয়। এখানে কোনো জোট গঠনের উপাদান ছিল না,’ বলেন তিনি।

ভারতের বিপক্ষে কোনো কৌশল হিসেবে বৈঠকটি দেখা হচ্ছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘এটি নিশ্চয়ই কোনো তৃতীয় পক্ষকে লক্ষ্য করে নয়। আমি আপনাদের তা নিশ্চিত করে বলতে পারি।’

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *