বাজেট সহায়তা, রেলপথ উন্নয়ন ও শিক্ষাবৃত্তির জন্য বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে ১.০৬৩ বিলিয়ন (১০৬ কোটি ৩০ লাখ ডলার) ডলারের সহায়তা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। শুক্রবার টোকিওতে দুই দেশের মধ্যে এ সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় জানিয়েছে, এই অর্থের মধ্যে ৪১৮ মিলিয়ন ডলার দেওয়া হবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংস্কার ও জলবায়ু সহনশীলতা বৃদ্ধির জন্য উন্নয়ন নীতি সহায়তা হিসেবে।
এছাড়া জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী রেল রুটকে দ্বৈত গেজ ডাবল লাইনে উন্নীত করার জন্য আরও ৬৪১ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে জাপান। পাশাপাশি, শিক্ষাখাতে সহায়তার অংশ হিসেবে বিভিন্ন বৃত্তির আওতায় ৪.২ মিলিয়ন ডলার অনুদান দেওয়া হবে ।
এ চুক্তির মাধ্যমে জাপান ও বাংলাদেশের মধ্যে উন্নয়ন সহযোগিতার সম্পর্ক আরও জোরদার হলো।
জাপান-বাংলাদেশ যৌথ বিবৃতি
টোকিও সফররত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইশিবা শিগেরু শুক্রবার এক দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠক শেষে উভয় দেশের মধ্যে একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশিত হয়।
বিবৃতিতে দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছরের বন্ধুত্বপূর্ণ ইতিহাসের কথা স্মরণ করে কৌশলগত অংশীদারিত্ব আরও গভীর করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করা হয়। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতার লক্ষ্যে ‘ফ্রি অ্যান্ড ওপেন ইন্দো-প্যাসিফিক’ (এফওআইপি) উদ্যোগে একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকারও জানানো হয়।
অধ্যাপক ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থনৈতিক সংস্কার ও শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী ইশিবা। জাপানের উন্নয়ন সহায়তা কর্মসূচি ‘বিগ-বি’ এবং মহেশখালী-মাতারবাড়ি অবকাঠামো প্রকল্পে জাপানের অব্যাহত সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা জানান ইউনূস।
জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী রেললাইন উন্নয়ন প্রকল্প ও জলবায়ু সহনশীলতা বৃদ্ধির ঋণচুক্তি স্বাক্ষরের পাশাপাশি, তথ্য নিরাপত্তা, ব্যাটারি চালিত সাইকেল কারখানা, প্রিপেইড গ্যাস মিটার ও বাংলাদেশ স্পেশাল ইকোনমিক জোনে জাপানি বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
এছাড়া নিরাপত্তা সহযোগিতা জোরদারে ৫টি প্যাট্রোল বোট সরবরাহ, প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি হস্তান্তরের চুক্তি এবং মানবসম্পদ উন্নয়নে বৃত্তি প্রকল্প নিয়ে সম্মত হয় উভয় পক্ষ।
রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের পক্ষে একমত হয়ে, দু’দেশ মিয়ানমারের সঙ্গে অর্থবহ সংলাপের আহ্বান জানানো হয়।