যশোরে দেশের একমাত্র মসলা গবেষণাকেন্দ্রে চাষ হচ্ছে মূল্যবান ভ্যানিলা, যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন গবেষণাকেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আবু হেনা ফয়সাল ফাইম।
ভ্যানিলা মূলত ‘প্ল্যানিফোলা’ প্রজাতি থেকে উৎপাদিত। এর ফল থেকে উৎপন্ন ভ্যানিলা বীজ বা ফ্লেভারিং এক্সট্র্যাক্ট বিশ্বজুড়ে খাদ্য, পানীয়, প্রসাধনী ও সুগন্ধি শিল্পে ব্যবহার করা হয়। কফি, চকোলেট, আইসক্রিম, পেস্ট্রি ও পুডিংয়ের স্বাদ ও গন্ধের জন্য এটি অপরিহার্য।
আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি কেজি ভ্যানিলার দাম প্রায় ৩০০-৪০০ মার্কিন ডলার। এটি বিশ্বে অন্যতম উচ্চ মূল্যবান মসলা হিসেবে পরিচিত।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সঠিক চাষ ও আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করে দেশের নতুন রপ্তানিযোগ্য ফসল হিসেবে এটি চাষ করা সম্ভব।
বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ফয়সাল বলেন, ‘ভ্যানিলা চাষ একটি অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং প্রক্রিয়া। এটি লতাবিশিষ্ট ফসল, যা বিশেষ সহায়ক গাছের সঙ্গে চাষ করতে হয়। আমাদের গবেষণাকেন্দ্রের পরীক্ষামূলক প্লটগুলোতে প্রতিটি ধাপে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে। বীজ বপন, লতা টানানো, ফুলের স্ব-প্রজনন এবং ফল ধরে রাখার কাজগুলো আধুনিক প্রযুক্তি ও অভিজ্ঞ গবেষকদের তত্ত্বাবধানে সম্পন্ন করা হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য দেশের ভ্যানিলা উৎপাদন বিস্তার করা এবং আন্তর্জাতিক মানের মসলা হিসেবে বাজারজাত করা। যা কৃষক ও উদ্যোক্তাদের জন্য নতুন দিগন্ত খুলে দেবে।’
মসলা গবেষকরা বলছেন, বগুড়ার উর্বর মাটি, সুষম জলবায়ু এবং পর্যাপ্ত বৃষ্টি ভ্যানিলার জন্য আদর্শ। ভ্যানিলা সূর্যকিরণ ও আর্দ্রতার মধ্যে বৃদ্ধি পায়। এ দেশের জলবায়ু এর চাহিদা পূরণে সক্ষম। তাই সঠিক চাষ ও বিপণন পদ্ধতি গ্রহণ করলে ভ্যানিলা বাংলাদেশের রপ্তানি খাতেও উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারবে।
এরই মধ্যেই বগুড়া মসলা গবেষণাকেন্দ্র দেশের অন্যান্য অঞ্চলের কৃষকদের জন্য প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি হস্তান্তর শুরু করেছে। কৃষকরা উৎসাহিত হয়ে ভ্যানিলা চাষ শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আগামী কয়েক বছরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পরীক্ষামূলক চাষ শুরু শুরু করা হবে।
ভ্যানিলা চাষের মাধ্যমে দেশের কৃষি অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হবে, এমনটাই প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।