বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলোতে আবারও সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টির পাশাপাশি প্রায় ১০ লাখ শরণার্থীর প্রত্যাবাসনের সম্ভাবনা আবারও হয়ে পড়েছে অনিশ্চিত।
আন্তর্জাতিক ক্রাইসিস গ্রুপ (আইসিজি)-এর এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি সম্প্রতি রাখাইন রাজ্যে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পর রোহিঙ্গা জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ঐক্য গড়ে উঠেছে এবং তারা এখন এই বাহিনীর বিরুদ্ধেই লড়াই করছে।
কক্সবাজারের শরণার্থী তত্ত্বাবধায়ক কমিশনার মো. মিজানুর রহমান এ প্রতিবেদনের অভিযোগকে ‘অসত্য’ বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘কোনো শিবিরে সশস্ত্র গোষ্ঠীর প্রশিক্ষণ বা নিয়োগের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।’
আইসিজি বলছে, অতীতে নিজেদের মধ্যেই সহিংসতার শিকার এসব গোষ্ঠী এখন ধর্মীয় ভাষা ও ‘জিহাদ’-এর মতো শব্দ ব্যবহার করে নিজেদের বেআইনি সশস্ত্র তৎপরতাকে ‘ধর্মীয় বৈধতা’ দিতে চায়। এতে শরণার্থীদের একাংশ, যারা আগে সহিংসতার কারণে তাদের সমর্থন করত না, এখন তারাও তাদের দিকে ঝুঁকছে।
বাংলাদেশ সরকার এখন গোপনে আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করলেও রোহিঙ্গা জঙ্গিদের প্রতি নিরাপত্তা বাহিনীর সহনশীলতা এই প্রচেষ্টাকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পরিস্থিতি সামাল দিতে হলে বাংলাদেশকে রোহিঙ্গা শিবিরগুলোর সন্ত্রাস দমন এবং রাখাইনের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার করতে হবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত হবে রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা বজায় রাখা এবং শান্তিপূর্ণ প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরুর সমাধান হিসেবে সব পক্ষকে আলোচনায় আনতে চাপ দেওয়া।