রুবেল হোসেনের প্রথম ওয়ানডে হ্যাটট্রিক, ভারতের বিপক্ষে ড্র করা টেস্ট, এর আগে অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের পিটিয়ে শাহরিয়ার নাফিসের সেঞ্চুরি; সবকিছুর সাক্ষী হয়ে আছে নারায়ণগঞ্জের খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়াম। বর্তমানে যা শহীদ রিয়া গোপ স্টেডিয়াম নামে পরিচিত। নাম বদলালেও এই মাঠে ২০১৬ সালের পর এই মাঠে আর আন্তর্জাতিক কোনো ম্যাচ হয়নি। একটা সময় ঢাকা লিগের ম্যাচও হতো। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষনের অভাবে সেই মাঠ পরিণত হয়েছে রীতিমতো ময়লার ভাগাড়ে। ভগ্নপ্রায় গ্যালারি, ড্রেসিংরুম আর প্রেসবক্স। মাঠের আউটারে ছিল কচুরিপানার রাজ্য।
বাংলাদেশের এক সময়কার আন্তর্জাতিক এই ভেন্যুর ভগ্নদশা দেখে বিসিবির নতুন সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলও আফসোস করেছেন। রবিবার নারায়ণগঞ্জ জেলা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে ‘ক্রিকেট ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড আইডিয়া’ অনুষ্ঠানে গিয়ে তিনি বলেছেন, মাঠের করুণ ছবি দেখে তারা রীতিমতো কান্না পাচ্ছে।
ফতুল্লার রিয়া গোপ স্টেডিয়ামের নির্মাণকাজের পরিদর্শন করে ক্রীড়া সংস্থার অনুষ্ঠানে গিয়ে বুলবুল বলেন, ‘এই নারায়ণগঞ্জ আমাদের জন্য এক সময় আদর্শ ছিল। কেননা এখানের ক্রিকেটের ইতিহাস বেশ সমৃদ্ধ। আমি যখন নিজেই ক্রিকেট খেলা শিখছিলাম। তখন নারায়ণগঞ্জের সঙ্গে আমার এক সুসম্পর্ক গড়ে উঠে। তখন এখানে বিভিন্ন লিগ অনুষ্ঠিত হতো। নারায়ণগঞ্জে বিভিন্ন ক্লাবে তখন খেলা হতো। নারায়ণগঞ্জের অসংখ্য খেলোয়াড় ঢাকায় গিয়ে খেলতো। এখনো নারায়ণগঞ্জের মানুষের ক্রিকেটের প্রতি যে আগ্রহ দেখলাম, তাতে আমি ভীষণ আনন্দিত। এখানে আসার আগে আমি ফতুল্লা স্টেডিয়ামে গিয়েছিলাম। স্টেডিয়ামটির করুণ অবস্থা দেখে আমার কান্না চলে আসছে। এখানে একসময় অসংখ্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হতো। অথচ এই মাঠটির অবস্থা বর্তমানে অত্যন্ত করুণ।’
নারায়ণগঞ্জের ক্রিকেটারদের বিসিবির তরফ থেকে আরো সুযোগ সুবিধা দিতে চান বুলবুল। সেই লক্ষ্যে অন্তত ২০টা উইকেট বানানোর পরিকল্পনা তাদের, ‘খেলোয়াড়দের জন্য আরও সুযোগ সুবিধা দরকার। এখানে এসে ৩টা উইকেট দেখতে পেলাম। আমাদের পরিকল্পনা এখানে অন্তত ২০টা উইকেট বানানোর। আমাদের সময় বছরের নির্দিষ্ট সময় ক্রিকেট খেলা হতো। এখন ১২ মাসই খেলা হয়। আমাদের খেলোয়াড়দের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর পাশাপাশি কোচিং সুযোগ সুবিধা বাড়ানোর চেষ্টা করব।’
নারায়ণগঞ্জ থেকে উঠে আসা জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে জিশান আলম আছেন বিসিবির ভাবনায়। ‘এ’ দলের হয়ে খেলেছেন চলমান টপ এন্ড টি-টোয়েন্টিতে। ডারউইনের এই টুর্নামেন্টে দারুণ একটা ফিফটিও করেছেন এই ডানহাতি ব্যাটার। অথচ জিশান উঠে এসেছেন নিজের এলাকায় সীমিত অনুশীলনের সুবিধা নিয়েই। এ নিয়ে বুলবুল আফসোস করে বলেন, ‘গতকাল জিসান ফিফটি করেছে বিশ্বমানের ক্রিকেটে, আর আজকে দেখলাম সে যেখানে অনুশীলন করে তার অবস্থা কেমন! এটা মেলানো যায় না।’