তিন মাসের জন্য বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমানের পদ স্থগিত করেছে বিএনপি। দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
মঙ্গলবার দলের এই সিদ্ধান্ত চিঠির মাধ্যমে ফজলুর রহমানকে জানানো হয়েছে বলে বিএনপির একটি সূত্র জানায়। তবে মঙ্গলবারই দলের কাছে কারণ দর্শানো নোটিশের জবাব দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের এই উপদেষ্টা।
লিখিত জবাবে ফজলুর রহমান বলেছেন, ‘আমার প্রিয় দল বিএনপির ক্ষতি হয় এমন কোনো কথা বা কাজ আমি করিনি এবং করবও না। জাতীয়তাবাদী দলের নেতৃত্বে বিচার বিবেচনার প্রতি আমার সর্বোচ্চ আস্থা আছে। আমি আশা করি, সুবিচার পাব এবং দলের বৃহত্তর স্বার্থে যেকোনো সিদ্ধান্তের প্রতি সর্বদা অনুগত থাকব।’
এদিকে মঙ্গলবার ফজলুর রহমানকে দেওয়া পদ স্থগিতের চিঠিতে বলা হয়, ‘২৪ আগস্ট আপনার (ফজলুর রহমান) নামে কারণ দর্শানো নোটিশ জারি করা হয়। আপনি কারণ দর্শানো নোটিশের লিখিত জবাব না দিয়ে সময় বর্ধিত করার জন্য আবেদন করেন। আপনার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২৫ আগস্ট কারণ দর্শানোর নোটিশের লিখিত জবাব প্রদানের জন্য পুনরায় ২৪ ঘণ্টার সময় বর্ধিত করা হয়। আপনি ২৬ আগস্ট কারণ দর্শানোর নোটিশের যে জবাব দিয়েছেন, তা সন্তোষজনক নয়। তথাপি বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে আপনার অবদান বিবেচনা করে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ না করে আপনার দলীয় প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ তিন মাসের জন্য নির্দেশক্রমে স্থগিত করা হলো।’
এতে আরও বলা হয়, ‘এখন থেকে আপনি টকশো বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কথা বলার সময় দেশের মর্যাদা ও দলের নীতিমালা যাতে ক্ষুণ্ন না হয় এবং দেশের জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় অনুভূতিতিতে আঘাত না লাগে, সে বিষয়ে সর্বদা সতর্ক থাকবেন বলে আশা করি।’
অন্যদিকে, মঙ্গলবার বিকালে অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান নামে নিজস্ব প্যাডে চার পৃষ্ঠার এই জবাবে দলের তরফ থেকে যা জানতে চাওয়া হয়েছে তা বিস্তারিত ব্যাখা করে কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব দিয়েছেন।
তার স্ত্রী অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম রেখা জানান, উনি (ফজলুর রহমান) এই সংক্রান্ত চিঠির জবাবে লিখিতভাবে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। সাংবাদিকদের সঙ্গে এখন উনি কথা বলবেন না। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বরাবর জবাবটি লেখা হয়েছে।
এদিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর জানিয়েছে তারা, অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের একটি খাম পেয়েছেন। জবাবটি চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে জমা দেওয়ার কথা থাকলেও ফজলুর রহমানের অনুরোধে আরও চব্বিশ ঘণ্টা সময় বৃদ্ধি করে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানো নোটিশে বলা হয়, ‘আপনি জুলাই-আগস্ট ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান নিয়ে “উদ্ভট ও শৃঙ্খলা পরিপন্থী” বক্তব্যের কারণে কেন আপনার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তার যথাযথ কারণ দেখিয়ে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একটি লিখিত জবাব দলের নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।’