নড়াইলের লোহাগড়ায় প্রেমিকার বিয়ের দিন প্রেমিক সৈয়দ মাসুম বিল্লাহর (২০) মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার কাশিয়ানী এলাকার মধুমতি সেতু থেকে অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করেন অটোরিকশাচালক সুজন। পরে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান তিনি। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় নেওয়ার প্রস্তুতিকালে দুপুরে মারা যান মাসুম।
নিহত মাসুম বিল্লাহ লোহাগড়া উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের মাকড়াইল (মধ্যপাড়া) গ্রামের মৃত সৈয়দ রকিবুল ইসলামের ছেলে।
স্বজনরা জানান, উপজেলার লাহুড়িয়া ইউনিয়নের এক কিশোরীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল মাসুমের। পারিবারিকভাবে তাদের সম্পর্ক মানা না হলে ঢাকায় কাজের সন্ধানে বোনের বাসায় আসেন। প্রেমিকার বিয়ের খবর পেয়ে শুক্রবার সকাল ৬টার পর লোহাগড়া পৌঁছান তিনি। সেদিন সকাল ৯টার দিকে চাচাত ভাই তরিকুল ফোন করে জানতে পারেন মাসুম লোহাগড়ায়। তরিকুল তাকে অনুরোধ করেন বাড়িতে ফেরার জন্য। এরপর পরিবারের সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ হয়নি মাসুমের।
অটোরিকশাচালক সুজন বলেন, ‘ঘটনাস্থলে দুর্ঘটনার কোনো চিহ্ন দেখিনি। আমার মনে হচ্ছে তাকে কেউ গাড়ি থেকে ফেলে রেখে গেছে।’
মাসুম ঢাকা থেকে ফিরে প্রেমিকার বিয়ে আটকানোর চেষ্টা করেছিল বলে জানিয়েছেন চাচা শরিফুল ইসলাম। এ কারণে তাকে হত্যা করা হতে পারে বলে ধারণা তার।
তিনি বলেন, ‘প্রেমিকার বাবা গ্রামের সাইফুল মোল্যাকে ফোনে জানান ‘মাসুম ঝামেলা করছে’। তার লোকজন মাসুমকে পেলে অবস্থা খারাপ করবে। আমরা খবর পাই মানিকগঞ্জ বাজারের এক পার্লারে প্রেমিকার সঙ্গে মাসুম দেখা করে কথা বলেছে। ওদিকে হুমকির খবর পেয়ে মাসুমকে খুঁজতে থাকি, কিন্তু তার ফোন বন্ধ পাই। পরে হাসপাতাল থেকে একজন ফোন করে তার খবর জানান।
শরিফুল ইসলামের মতে, ‘দুর্ঘটনা হলে হাত-পা অক্ষত থাকার কথা না। তার মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল, তার বাম হাতের একটা আঙুলের নখ উপড়ে ফেলা হয়েছে। প্রেমিকার পরিবারের সদস্যরা পরিকল্পিতভাবে মাসুমকে হত্যা করেছে।’
এ ঘটনায় মাসুমের প্রেমিকার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা মাসুম বিল্লাহকে মৃত অবস্থায় লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে থানায় নিয়ে আসি। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, তিনি দুর্ঘটনায় মারা যাননি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।’