প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নাম বদলে ‘যুদ্ধ মন্ত্রণালয়’ করছেন ট্রাম্প

টাইমস রিপোর্ট
3 Min Read
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: হোয়াইট হাউস, এক্স
Highlights
  • এই নির্বাহী আদেশে প্রতিরক্ষা সচিব (মন্ত্রী) পিট হেগসেথ ও তার অধীনস্থ কর্মকর্তাদের নতুন নামগুলো ‘গৌণভাবে’ ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে হেগসেথকে স্থায়ীভাবে নাম পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজনীয় আইনগত ও নির্বাহী পদক্ষেপে নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নাম পাল্টে ‘ডিপার্টমেন্ট অব ওয়ার’ বা ‘যুদ্ধ মন্ত্রণালয়’ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই সঙ্গে প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথকে সেক্রেটারি অব ওয়ার বা যুদ্ধমন্ত্রী নামে পরিচিত করতেও নির্দেশ দিয়েছেন।

বিবিসি’র খবরে বলা হয়, পেন্টাগনের নতুন নাম কার্যকর করে শুক্রবার নির্বাহী আদেশে সই করবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তবে যেহেতু মন্ত্রণালয়ের নাম বদল করার দায়িত্ব মার্কিন কংগ্রেসের, তাই আপাতত নতুন নামকে আগের নামের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা হবে।

মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে সংক্ষেপে পেন্টাগন ডাকা হয়, এটি যুক্তরাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনীর তদারককারী মন্ত্রণালয়। দেশটির আইন অনুযায়ী, স্থায়ীভাবে পেন্টাগনের নাম পরিবর্তন করতে হলে কংগ্রেসের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে আইন সংশোধন করে প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতা দিতে হবে।

পেন্টাগন মূলত যুক্তরাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনীর কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করার কেন্দ্রীয় সংস্থা (সেন্ট্রাল কমান্ড)। ১৭৮৯ সালে দপ্তরটির প্রতিষ্ঠাকালে নাম ছিল ‘ওয়ার ডিপার্টমেন্ট’। তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৪৭ সালে নামটি পরিবর্তন করে রাখা হয় ডিপার্টমেন্ট অব ডিফেন্স বা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দপ্তরটির প্রতিষ্ঠাকালের সেই নামটিই ফিরিয়ে আনতে চলেছেন।

খসড়া নির্বাহী আদেশের বরাতে সংবাদমাধ্যমটি জানায়, ক্ষমতাসীন ট্রাম্প প্রশাসনের মতে, ‘ডিপার্টমেন্ট অব ওয়ার’ নামটি সশস্ত্র বাহিনীর যুদ্ধ প্রস্তুতি ও সংকল্পের প্রতি শক্ত বার্তা দেয়। অন্যদিকে ‘ডিপার্টমেন্ট অব ডিফেন্স’ কেবল বাইরের আক্রমণ থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে রক্ষার ওপর জোর দেয়।

এই নির্বাহী আদেশে প্রতিরক্ষা সচিব (মন্ত্রী) পিট হেগসেথ ও তার অধীনস্থ কর্মকর্তাদের নতুন নামগুলো বিকল্পভাবে ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে হেগসেথকে স্থায়ীভাবে নাম পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজনীয় আইনগত ও নির্বাহী পদক্ষেপে নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

খসড়া আদেশটিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ‘ওয়ার ডিপার্টমেন্ট নামটি ফিরিয়ে আনা হলে তা আমাদের জাতীয় স্বার্থের প্রতি মনোযোগ বাড়াবে এবং আমাদের প্রতিপক্ষদের বুঝিয়ে দেবে যুক্তরাষ্ট্র তার স্বার্থ রক্ষায় যেকোনো সময় যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত।’

স্থায়ীভাবে নাম পরিবর্তনে বড় অংকের ব্যয় হতে পারে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কিছু সংবাদমাধ্যম। তাদের ধারণা, দপ্তরটির অধীনে শত শত সংস্থা, লোগো, ইমেইল ঠিকানা, ইউনিফর্মসহ বহু জায়গায় পরিবর্তন আনতে বিলিয়ন ডলারের বেশি খরচ হতে পারে। আর অর্থের যোগান দিতে কাটছাঁট করা হতে পারে প্রতিরক্ষা দপ্তরের (মন্ত্রণালয়) বাজেট।

কূটনৈতিক এবং সামরিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই নাম পরিবর্তন ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সি ক্ষমতাকালের ২০০তম নির্বাহী আদেশ। ট্রাম্প এমন এক সময়ে প্রতিরক্ষা দপ্তরের নামে ‘যুদ্ধ’ যুক্ত করলেন যখন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনকে সঙ্গে নিয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং জমকালো সামরিক কুচকাওয়াজের আয়োজন করল। ওই কুচকাওয়াজে প্রদর্শিত আধুনিক প্রযুক্তির অস্ত্র, ড্রোন এবং সামরিক সরঞ্জাম যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি সতর্কবার্তা বলে মনে করছেন তারা।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *