খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি থেকে অপহরণের ১২ দিন পর মোহাম্মদ সোহেল (১৪) নামে এক কিশোরের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় দুর্গম পাহাড়ে সেনা অভিযান চালিয়ে অস্ত্র ও নথিপত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে মংসানু মারমা নামে এক যুবককে।
সেনা বাহিনীর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মংসানু আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ, প্রসিত গ্রুপ)- এর গুইমারা জোনের সিন্দুকছড়ি অঞ্চলের কমান্ডার। তিনি ওই কিশোর ‘অপহরণের মূল পরিকল্পনাকারী’ বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
পুলিশ জানায়, মাদ্রাসা ছাত্র সোহেলকে অপহরণ ও হত্যার ঘটনায় ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সবশেষ শনিবার সেনাবাহিনীর হাতে আটক হন মংসানু মারমা।
সেনাবাহিনীর বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ১৭ জুলাই পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ টহল মানিকছড়ি উপজেলা থেকে কিশোর সোহেলের হাত, পা ও মুখ বাঁধা গলিত মরদেহ উদ্ধার করে। কিছুদিন আগে মুক্তিপণের দাবিতে ইউপিডিএফ (প্রসিত) ওই কিশোরকে অপহরণ করেছিল।

অন্যদিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার ভোরে একই উপজেলার গচ্ছাবিল এলাকায় অভিযান চালালে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা সেনাবাহিনীর টহল দলকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে। পরে আহত অবস্থায় আটক করা হয় ইউপিডিএফ কমান্ডার মংসানু মারমাকে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, পরে ওই এলাকাটিতে তল্লাশি চালিয়ে তিন রাউন্ড গুলিসহ একটি দেশীয় পিস্তল, চাঁদা আদায়ের রশিদসহ ইউপিডিএফ-এর গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, গত ৪ জুলাই রাতে মানিকছড়ি উপজেলার দুই নম্বর বাটনাতলী ইউনিয়নের ছদুরখীল এলাকায় নিজ বাড়ীতে ফেরার পথে নিখোঁজ হয় মোহাম্মদ সোহেল (১৪) । সে গোরখানায় প্রতিষ্ঠিত শাহানশাহ হক ভান্ডারী সুন্নিয়া দাখিল মাদরাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। বাবার নাম আবদুল জলিল।
পরে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা সোহেলের মুক্তিপণ হিসেবে তার নানা আবদুল রহিমকে টেলিফোন করে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে।
এ ব্যাপারে আবদুল রহিম পাঁচ জনের নাম উল্লেখ করে অপহরণ মামলা করেন। পরে এ মামলায় যৌথবাহিনী সম্বু কুমার ত্রিপুরা (৩৬), মাঈন উদ্দিন (২১) ও মো. ইয়াছিন মিয়া (২৮) নামে তিনজনকে আটক করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা অপহরণের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করলেও অপহৃতের সন্ধান দিতে পারেনি।
পরে গত বুধবার বুদংপাড়া এলাকার একটি ছড়া থেকে উদ্ধার করা হয় সোহেলের মরদেহ।