পাকিস্তানের নাগরিকত্ব ছেড়ে বিপাকে দুই বোন

2 Min Read
ভারত-পাকিস্তান নাগরিকত্ব জটিলতায় দিশেহারা দুই নারী। ছবি: সংগৃহীত
Highlights
  • পাকিস্তান দূতাবাস জানায়, দেশটির আইন অনুযায়ী, নাগরিকত্ব পরিত্যাগের জন্য কোনো ব্যক্তির ন্যূনতম ২১ বছর হতে হয়। ওই দুই বোনের পাসপোর্ট জমা দেওয়ার সময় কারও বয়সই ২১ বছর হয়নি। তাই নাগরিকত্ব পরিত্যাগের সনদপত্র দেওয়া হয়নি।

ভারতের নাগরিকত্ব পেতে পাকিস্তানের নাগরিকত্ব ছেড়ে বিপাকে পড়েছেন দুই নারী। তারা সম্পর্কে দুই বোন। পাকিস্তানের নাগরিকত্ব পরিত্যাগের পর বর্তমানে রাষ্ট্রহীন জীবনযাপন করছেন তারা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই দুই নারী জানান, ২০১৮ সালে পাকিস্তানের নাগরিকত্ব ত্যাগ করলেও সে বিষয়ক কোনো নথি দিল্লির পাকিস্তান দূতাবাস এখনো তাদের হাতে দেয়নি। পাকিস্তানের নাগরিকত্ব ত্যাগের কোনো দাপ্তরিক প্রমাণ না থাকায় ভারতও তাদের নাগরিকত্ব দিতে পারছে না।

বিবিসি’র অনুসন্ধানে উঠে আসে রাষ্ট্রবিহীন ওই দুই বোনের সেই দুর্দশার চিত্র। সংবাদমাধ্যমটি তাদের প্রতিবেদনে জানায়, পাকিস্তানের পাসপোর্ট নিয়েই ২০০৮ সাল থেকে তারা পরিবারের সঙ্গে ভারতের কেরালায় থাকছেন। ভারত-পাকিস্তান নানা দ্বন্দ্বের জেরে তাদের পূর্বপুরুষেরা বিভিন্ন সময় দুই দেশেই অবস্থান করতে বাধ্য হন। কাজেই জন্মসূত্রে পরিবারের কয়েকজন ভারতের আবার কয়েকজন পাকিস্তানের নাগরিক।

ভারতীয় পাসপোর্ট। ছবি: সংগৃহীত

তবে সবাই এক সঙ্গে বসবাস করার আকাঙ্ক্ষা থেকে ভারতীয় নাগরিকত্ব পেতে অবশেষে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন ওই দুই নারী।

সম্প্রতি তারা আদালতে জানিয়েছেন, ২০১৭ সালেই তারা দিল্লির পাকিস্তান দূতাবাসে নিজেদের পাসপোর্ট জমা দিয়ে দিয়েছেন। তবে পাকিস্তান দূতাবাস জানায়, দেশটির আইন অনুযায়ী, নাগরিকত্ব পরিত্যাগের জন্য কোনো ব্যক্তির ন্যূনতম ২১ বছর হতে হয়। ওই দুই বোনের পাসপোর্ট জমা দেওয়ার সময় কারও বয়সই ২১ বছর হয়নি। তাই নাগরিকত্ব পরিত্যাগের সনদপত্র দেওয়া হয়নি।

অন্যদিকে, ভুক্তভোগী দুইজনের দাবি, ২১ বছর বয়স হওয়ার পরে তারা যখন আবারও পাকিস্তানের দূতাবাসের কাছে নাগরিকত্ব পরিত্যাগের সনদ নিতে যান, তখনো সেই নথি তাদের দেওয়া হয়নি। তার পেছনে কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণও দেখানো হয়নি বলে দাবি করেন তাদের মা রাশিদা বানো। এমনকি তারা দুই মেয়ের পাকিস্তানের পাসপোর্ট ফেরত চাইলে সেটিও দেওয়া হয়নি।

তাদের কাছে পাকিস্তান দূতাবাসের পাসপোর্ট বাতিলের যে নথিটি রয়েছে, সেটি আবার মানতে চাইছে না ভারত সরকার। এ নিয়ে আদালতে আবেদন করা হলে, বিচারকরা তাদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার নির্দেশ দেন। তবে ভারতীয় সরকার সে রায়ের বিপরীতে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করলে, আগের রায় বাতিল করে ভারতীয় নাগরিকত্ব সম্পর্কিত সব সিদ্ধান্তের একচ্ছত্র ক্ষমতা কেবল সরকারের হাতে ছেড়ে দিয়ে নতুন রায় ঘোষিত হয়।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *