পদ্মার ক্রমাগত ভাঙনে দিশেহারা মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার চরাঞ্চলের মানুষ। ইতোমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে দুর্গম লেছড়াগঞ্জ, সুতালড়ি ও আজিমনগর ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা। ভিটেমাটি হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর দিন কাটাচ্ছে শতাধিক পরিবার।
হরিরামপুরের পদ্মাপাড়ে যতটুকু জায়গা টিকে আছে, সেখানেও আছড়ে পড়ছে শক্তিশালী ঢেউ। ভাঙ্গনের শঙ্কায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন নদীপাড়ের হাজারও মানুষ। আর্তনাদ করে তারা বলেন, ‘পদ্মার ভাঙন থামাও, বাঁচাও আমাদের জীবন ও আশ্রয়।’
ভাঙন কবলিত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পদ্মার তীব্র ভাঙনে লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নের হাজার হাজার বিঘা আবাদি জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। ভিটেমাটি হারিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে পরিবার নিয়ে অন্যত্র সরে যেতে বাধ্য হয়েছেন অনেকে। কেউ আবার অস্থায়ী ঘর বেঁধেছেন খোলা আকাশের নিচে।

ভুক্তভোগী শাকিল গাজী বলেন, ‘আমাদের শেষ সম্বল- ভিটেমাটিও পদ্মার গর্ভে চলে গেছে। এখন আর যাওয়ার কোনো জায়গা নেই। আমরা একেবারেই নিঃস্ব হয়ে পড়েছি।’
অবিলম্বে ভাঙন রোধে স্থায়ী সমাধানের দাবি জানিয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। হরিরামপুরের দুর্গম চরাঞ্চলকে বাঁচাতে পানি উন্নয়ন বোর্ডেরও সহযোগিতা চান শাকিল।
একই এলাকার বাসিন্দা লিপি আক্তার আর্তনাদ করে বলেন, ‘আমরা কোনো ত্রাণ চাই না। সরকারের কাছে একটাই দাবি, আমাদের যেটুকু আছে, তা যেন আর গাঙ্গে না যায়। আমরা স্থায়ী একটা বাঁধ চাই।’
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতি হাজী আব্দুল হান্নান মৃধার অভিযোগ, একাধিকবার পানি উন্নয়ন বোর্ডকে ভাঙ্গনের বিষয়টি জানানো হলেও কোনো স্থায়ী সমাধান আসেনি।
হরিরামপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা কোহিনূর আক্তার বলেন, ‘ভাঙনের বিষয়টি আমি অবগত আছি। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। শিগগিরই ভাঙন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’