আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে হতে যাওয়া জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ এ রোডম্যাপ ঘোষণা করেন। এতে নির্বাচনের জন্য ২৪টি ধাপে কর্মপরিকল্পনা নেওয়ার কথা জানানো হয়।
এতে বলা হয়, নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন ও সংসদীয় আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণের কাজ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শেষ করতে চায় নির্বাচন কমিশন। এছাড়া সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ বসার পরিকল্পনার কথাও এতে বলা হয়। তবে ভোটগ্রহণ বা তফসিলের কোনো তারিখ নির্ধারণ করেনি ইসি।
ইসির কর্মপরিকল্পনায় যা রয়েছে:
- অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ: সেপ্টেম্বরে শেষ সপ্তাহ থেকে শুরু। শেষ হতে সময় লাগবে দেড় মাস।
- ভোটার তালিকা হালনাগাদ: ইতোমধ্যে দ্বিতীয় ধাপের সম্পূরক খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, যা চূড়ান্ত করা হবে ৩১ আগস্ট। আর ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে ৩০ নভেম্বর। এরজন্য খসড়া প্রকাশ হবে ১ নভেম্বর।
- নির্বাচনী আইনবিধি: সকল আইন বিধি ৩১ আগস্টের মধ্যে সংশোধনের প্রস্তাব ও প্রণয়ন।
- এছাড়া সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ আইন সংশোধন, ভোটার তালিকা আইন সংশোধন, সংসদ নির্বাচনের ভোট কেন্দ্র নীতিমালা ও ব্যবস্থাপনা চূড়ান্ত, দেশি, বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সংবাদিক নীতামালা চূড়ান্ত, নির্বাচন পরিচালনা (সংশোধন) ২০২৫ প্রতীকসহ, নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন ১৯৯১, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় আইন ২০০৯– এগুলো আইন মন্ত্রণালয়ে প্রক্রিয়াধীন আছে যা ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শেষ করার আশা।
- রাজনৈতিক দল নিবন্ধন: ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে চূড়ান্ত।
- সীমানা নির্ধারণ : ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে চূড়ান্ত করে গেজেট প্রকাশ আর ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জিআইএস ম্যাপ প্রস্তুত ও প্রকাশ।
- পর্যবেক্ষক নিবন্ধন: ২২ অক্টোবরের মধ্যে চূড়ান্ত করে ১৫ নভেম্বর নিবন্ধন সনদ প্রদান। বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকদের অনুমতি প্রদানে যাবতীয় কার্যক্রম শেষ করা হবে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে। এছাড়া ১৫ নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচনী তথ্য প্রচারের জন্য তথ্য মন্ত্রণালয়, আইসিটি মন্ত্রণালয়, টিএন্ডটি, বিটিআরসিসহ বিভিন্ন মোবাইল অপারেটর কোম্পানির সঙ্গে সভা করবে ইসি।
- এছাড়া, নির্বাচনী ম্যানুয়েল, নির্দেশিকা, পোস্টার ইত্যাদি মুদ্রণ শেষ করা হবে ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে। নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ২৯ আগস্ট থেকে ভোটগ্রহণের ৪ থেকে ৫ দিন আগে যাবতীয় প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শেষ করবে ইসি। নির্বাচনের সকল প্রকার মালামাল সংগ্রহ ও বিতরণ কার্যক্রম শেষ করা হবে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে। ব্যবহার উপযোগী স্বচ্ছ ব্যালট চূড়ান্ত করা হবে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে।
- ১৫ নভেম্বরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাজেট চূড়ান্ত। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনূকূলে অর্থ বরাদ্দের জন্য বৈঠক ১৬ নভেম্বর থেকে ২০ নভেম্বরের মধ্যে। নির্বাচনের জন্য জনবল ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করতে চায় ইসি। এছাড়া ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের প্যানেল প্রস্তুত শেষ হবে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রথম সভা হবে ২৫ সেপ্টেম্বর। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য কার্যাবলী গ্রহণ করবে ধাপে ধাপে।
- নির্বাচনের জন্য আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হবে ৩১ অক্টোবর। ৩১ অক্টোবরের মধ্যে আইসিটি সংক্রান্ত সকল কাজ শেষ করতে চায় কমিশন। ইসি সচেতনতামূলক প্রচার কাজ শেষ করতে চায় ৩০ নভেম্বরের মধ্যে। এছাড়া একই সময়ে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা সচল রাখা, ফলাফল কীভাবে প্রকাশ ও প্রচার করা হবে, তা নির্ধারণ এবং বেসরকারি ফলাফল প্রচার সংক্রান্ত কার্যক্রম গ্রহণ। ২০২৬ সালের জানুয়ারির মধ্যে প্রবাসীদের জন্য পোস্টাল ব্যালটে ভোটের যাবতীয় কার্যক্রম শেষ করা।
নির্বাচন কমিশনের রোডম্যাপের বিস্তারিত।