নারী সংস্কার কমিটির সুপারিশ আল্লাহর বিধানের বিপক্ষে: জামায়াত আমির

টাইমস রিপোর্ট
4 Min Read
দুদিনব্যাপী জেলা ও মহানগরী আমির সম্মেলনে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখছেন দলের আমির ডা. শফিকুর রহমান। ছবি: জামায়াতে ইসলামীর ফেসবুক পেজ
Highlights
  • 'দু'টি সময় আমরা নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত মনে করি। একটি হচ্ছে ফেব্রুয়ারি মাস রোযা শুরুর আগে। আরেকটা হচ্ছে যদি কোনো কারণে এই সময়ের ভেতরে সংস্কারগুলো এবং বিচারের দৃশ্যমান প্রক্রিয়া জনমনে আস্থা সৃষ্টির পর্যায়ে না আসে-তাহলে সর্বোচ্চ এপ্রিল পার হওয়া উচিত নয়।'

নারী বিষয়ক সংস্কার কমিটির কিছু সুপারিশ আল্লাহর বিধানের বিপক্ষে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

শনিবার (৩ মে) সকাল ৯টায় রাজধানীর মগবাজারের আল ফালাহ মিলনায়তনে দুদিনব্যাপী জেলা ও মহানগরী আমির সম্মেলন উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বার্তা সংস্থা ইউএনবি জানায়, জামায়াত আমির বলেন, ‘অতিসম্প্রতি নারী বিষয়ক সংস্কার কমিটি প্রধান উপদেষ্টা বরাবর সুপারিশমালা পেশ করেছে। তারা কিছু সুপারিশমালায় কিছু কিছু সুপারিশ আল্লাহর বিধানের বিপক্ষে দাঁড় করিয়ে পেশ করা হয়েছে। তাদের এই সুপারিশ গ্রহণ করলে কোরান পরিবর্তন হয়ে যাবে। অথচ আল্লাহ তায়ালা কোরান নাযিল করে বলেছেন, কোরান নাযিল করেছি আমি, রক্ষাও করব আমি। এখানে একটা হরফ, নোকতাও কেউ পরিবর্তন করতে পারবে না।’

তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা এ বছর ডিসেম্বর থেকে আগামী ২৬ সালের জুনের মধ্যে নির্বাচন দেওয়ার কথা বলেছেন। ফেব্রুয়ারির শেষে এবং মার্চের তিন ভাগের দুই ভাগ সময় জুড়ে রোযা থাকবে, তার পরেই ঈদ। এই সময় কোনো নির্বাচনের সময় নয়। দু’টি সময় আমরা নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত মনে করি। একটি হচ্ছে ফেব্রুয়ারি মাস রোযা শুরুর আগে। আরেকটা হচ্ছে যদি কোনো কারণে এই সময়ের ভেতরে সংস্কারগুলো এবং বিচারের দৃশ্যমান প্রক্রিয়া জনমনে আস্থা সৃষ্টির পর্যায়ে না আসে-তাহলে সর্বোচ্চ এপ্রিল পার হওয়া উচিত নয়।’

প্রচলিত নির্বাচন ব্যবস্থার ত্রুটি তুলে ধরে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতে অনুষ্ঠানের দাবি জানান ডা. শফিকুর রহমান।

তিনি আরো বলেন, ‘আনুপাতিক হারে প্রতিনিধিত্বশীল ব্যবস্থায় নির্বাচন হতে হবে। বিশ্বের ৬২টি দেশ এটা অনুসরণ করে। বেশির ভাগ উন্নত দেশ, তারা এর সুফল পেয়েছে। এটা যারা একবার শুরু করেছে, তারা আর বাদ দেয়নি।’

জামায়াত আমির বলেন, ‘আমরা ট্রেডিশনাল (প্রচলিত) নির্বাচন পদ্ধতি দেখেছি। এর মাধ্যমে সংসদের মধ্যে আইন প্রণেতা হিসেবে মনোনীত ব্যক্তিরা, যারা লেখা দেখে যারা পড়তে পারেন না-তারাও সংসদ সদস্য হয়েছে। তারা কি আইন রচনা করে বাংলাদেশের মানুষকে দিবেন? তারা কোন আইনটা সংস্কার সাধন করার মতো যোগ্যতা রাখেন?’

তিনি বলেন, ‘এজন্য আমরা বলেছি যে, আনুপাতিক হারে সেখানে যাবে। যে যত পার্সেন্ট ভোট পাবে, সে ততো আসন পাবে। এতে করে কোনো দলকে ছোট এবং বড় বলার কারো সাহস হবে না। দল ছোট হউক বড় হউক দল দলই এবং কোন দল কারো দয়ার পাত্র হবে না। তার নিজের দল নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘অবশ্যই নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হতে হবে। এই সুষ্ঠু এবং বস্তুনিষ্ঠতার স্বার্থে কতিপয় সংস্কার অবশ্যই করতে হবে। এ বিষয় আমরা আমাদের সুপারিশমালা সংশ্লিষ্ট কমিশনগুলোর কাছে পেশ করছি। আমরা সকল দলের প্রতি আহ্বান জানাবো রাজনীতি নিজের জন্য নয়। রাজনীতি দেশ এবং জনগণের জন্য। আমরা যত বেশি সহযোগিতা করব, জাতি তত বেশি উপকৃত হবে। ততটাই আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু এবং সুন্দর হবে।’

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমরা বলেছি, অবশ্যই যারা অপরাধী তাদের বিচারটা দৃশ্যমান হোক-জাতি এটা দেখতে চায়। এ স্বল্প সময় সব বিচার করা সম্ভব নয়, এটা আমরাও বুঝি। কিছু বিচারতো করতে হবে। যাতে জাতির মনে আস্থা তৈরি হয়। যারা প্রধান অপরাধী তাদের বিচারের আওতায় এনে দৃশ্যমান বিচার জাতির সামনে অবশ্যই উপস্থাপন করতে হবে।’

সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারের পরিচালনায় সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম, ড. হামিদুর রহমান আযাদ, মাওলানা আবদুল হালিম, মাওলানা মো. শাহজাহান, অ্যাডভোকেট মুয়াযযম হোসাইন হেলাল, অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়েরসহ কেন্দ্রীয় নির্বাহী ও কর্মপরিষদ সদস্য, জেলা ও মহানগরী আমিররা।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *