বিভিন্ন মহলের প্রতিবাদ ও সমালোচনার মুখে ‘অঞ্জলি লহ মোর’ ভাস্কর্য ভাঙার কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। যদিও ইতোমধ্যে ভাস্কর্যটির অনেকটা অংশ ভেঙে ফেলা হয়েছে।
ময়মনসিংহের ত্রিশালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের নির্দেশে এটি ভাঙা ও অপসারণ কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।
ডিনদের নিয়ে এক অনলাইন বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম। রোববার সংশ্লিষ্ট দপ্তর প্রধান ও প্রশাসনকে নিয়ে আরেকটি বৈঠক করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।
এর আগে ভাস্কর্য ভাঙার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন, বিভিন্ন শিল্পী ও শিক্ষকদের প্রতিবাদ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনার পর প্রশাসন এমন সিদ্ধান্তে আসে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বিষয়টি নিয়ে এর আগে অনানুষ্ঠানিকভাবে কথা হয়েছিল। কিন্তু ভাঙা হবে কি না সেটির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। মূলত ভাস্কর্যটি যেভাবে তৈরি করার কথা ছিল, আগের প্রশাসন তা করেনি।
৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন অংশ থেকে ভাস্কর্যটির বিষয়ে আপত্তি ছিল। অনলাইনে ডিনস কমিটির একটি মিটিং হয়েছে, কাজ আপাতত বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। জলাশয় ও সৌন্দর্যবর্ধনের যে বিষয়টি রয়েছে, রোববার সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রধান ও ডিনদের সমন্বয়ে আবারও আলোচনা করা হবে।
জানা যায়, ৪ কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুকুরগুলোর সংস্কার কাজ শুরু হয়। অনুষদ ভবনের সামনের পুকুরটির সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য নির্মাণ করা হয়েছিল ভাস্কর্যটি। তবে মূল নকশাকে বাদ দিয়ে নিজের ইচ্ছে মতই ভাস্কর্যটি স্থাপন করেন সাবেক উপাচার্য সৌমিত্র শেখর।
মানববন্ধনে আইন ও বিচার বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী জেনাস ভৌমিক বলেন, যারা জনগণের টাকায় তৈরি এই রাষ্ট্রীয় সম্পদ ভেঙেছে ও ভাঙার নির্দেশ দিয়েছে, তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে ও জরিমানা আদায় করতে হবে। একই সঙ্গে এই ভাস্কর্যকে আগের নকশা অনুযায়ী সংস্কার করতে হবে।
ফোকলোর বিভাগের শিক্ষার্থী ঐশ্বর্য সরকার বলেন, ভাস্কর্যটি ভাঙার মধ্য দিয়ে প্রশাসন শিক্ষার্থীদের মাঝে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করেছে। ভাস্কর্য ভেঙে ফেলা মানে শিল্প-সংস্কৃতিকে আঘাত করা। আমরা এর প্রতিবাদ জানাই।
বিভিন্ন মহলের আপত্তিতে ভঙার কথা প্রশাসন থেকে বার বার বলা হলেও এর কোন সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেনি প্রশাসন। এছাড়া ভাস্কর্যটি ভাঙার কোন লিখিত নির্দেশও দেয়া হয়নি বলে জানায় প্রশাসন।
এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির। সংগঠন দুটির নেতারা জানান, তাদের পক্ষ থেকে এটি ভাঙার কোন দাবি জানানো হয়নি।
এদিকে, এটি ভাঙার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে ১২১ জন কবি ও সাহিত্যিক বিবৃতি দিয়েছেন।