নীলফামারীর উত্তরা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (ইপিজেড) কারখানাগুলো টানা দুইদিন বন্ধ থাকার পর বৃহস্পতিবার থেকে পুনরায় চালু হচ্ছে। তবে, পরচুলা তৈরির কারখানা এভারগ্রিন চালু হবে শনিবার। বেপজা কর্তৃপক্ষ বুধবার বিকালে আলোচনা শেষে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বুধবার রাত পর্যন্ত ইপিজেডের বেপজা অফিসে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় শ্রমিক, কারখানা মালিক, বেপজা, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা শেষে কারখানা মালিক পক্ষ শ্রমিকদের দাবি মেনে নেওয়ায় বৃহস্পতিবার থেকে ইপিজেডের সব কারখানা খুলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তবে, এভারগ্রিন কারখানার কিছু প্রস্তুতিজনিত কারণে এটি শনিবার খুলবে।
জেলা বিএনপির সদস্য ও সরকারি কৌঁসুলি (জিপি) আইনজীবী আবু মোহাম্মদ সোয়েম ও জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির খায়রুল আনামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
নীলফামারী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান জানান, বুধবার রাত পর্যন্ত জেলা প্রশাসন, কারখানা মালিক, বেপজা কর্তৃপক্ষ, বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতারা ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের নিয়ে সভা হয়।
তিনি বলেন, ‘শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবিগুলোর বেশির ভাগ কারখানা মালিকরা মেনে নিয়েছেন। এজন্য বৃহস্পতিবার থেকে সব কারখানা খুলছে।’
এদিকে, এভারগ্রিন কারখানা কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি ৫১ জন শ্রমিক ছাঁটাই করার পর থেকে ওই শ্রমিকরা ২৩ দফা দাবি নিয়ে আন্দোলন করে আসছিল। ফলে, এভারগ্রিন কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার পুরো কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে এবং শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন শুরু করে।
এই পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শ্রমিকদের সড়ক থেকে সরে যেতে বললে, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। একপর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলি চালালে হাবিব ইসলাম (২০) নামে এক শ্রমিক নিহত এবং অন্তত ২৪ জন আহত হন।
এরপর, পরিস্থিতি অবনতির দিকে গেলে ইপিজেড বন্ধ হয়ে যায় এবং বুধবারও বন্ধ ছিল। এতে ২৪টি শিল্পকারখানার উৎপাদন বন্ধ থাকে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সেখানে দুই প্লাটুন বিজিবি, পুলিশ এবং সেনা মোতায়েন করা হয়।
এ বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে এবং বেপজা পক্ষ থেকে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে, শ্রমিক নিহতের ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি। নিহত শ্রমিকের পরিবার ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফন করেছে।
আলোচনায় এভারগ্রিন কোম্পানি শ্রমিকদের ২৩ দফা দাবি মেনে নিয়েছে।