এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ বাছাইপর্বের জয়রথে ছুটছে বাংলাদেশ। নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে দুর্বল প্রতিপক্ষকে কোনো সুযোগ না দিয়ে গোলের বন্যা বইয়ে দিয়েছেন তৃষ্ণা, সাগরিকা ও শান্তিরা।
প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে শুরু, এরপর আর থামেনি বাংলাদেশের গোল মিছিল। ইনজুরি টাইমে গোলের সূচনা করেন তৃষ্ণা। দ্বিতীয়ার্ধের ৫৩ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় এবং দলের পঞ্চম গোলটি করেন তিনি। আর ম্যাচের ৮৩ মিনিটে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করে ম্যাচের সবচেয়ে উজ্জ্বল তারকায় পরিণত হন এই ফরোয়ার্ড।
তৃষ্ণার হ্যাটট্রিকের শেষ গোলটি আসে দুর্দান্ত এক দলীয় আক্রমণ থেকে। সাগরিকা ডিফেন্ডার ও গোলরক্ষককে পরাস্ত করে বল ঠেলে দেন পোস্টের সামনে। ফাঁকা গোলপোস্টে ঠাণ্ডা মাথায় প্লেস করে গোলটি করেন তৃষ্ণা।
সাগরিকার কথাও আলাদা করে বলতেই হয়। ৭২ মিনিটে একক প্রচেষ্টায় গোলরক্ষককে পরাস্ত করে তিনি করেন দারুণ এক গোল। আগের ম্যাচেও জোড়া গোল করেছিলেন, এবারও ছন্দে থাকার প্রমাণ রাখলেন। ম্যাচের একদম শেষ মুহূর্তে মুনকি আক্তারের গোলেই রেফারির শেষ বাঁশি বাজে।
তবে ম্যাচের সবচেয়ে দর্শনীয় গোলটি করেন শান্তি মারডি। ৩২ মিনিটে তার নেওয়া কর্নার কিক সোজা জালে জড়িয়ে অলিম্পিক গোল উপহার দেন তিনি। প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডার ও সতীর্থরা বল স্পর্শ করতে ব্যর্থ হন, গোলরক্ষকও বলের ফ্লাইট বুঝতে পারেননি। সাইড পোস্ট পেরিয়ে বল ঢুকে পড়ে জালে, যা ফুটবলে একটি অত্যন্ত দুর্লভ মুহূর্ত।
তিন মিনিট পর আবারও কর্নার থেকে গোল আদায় করে বাংলাদেশ। এবারও কর্নার দেন শান্তি, বক্সে হেড করে গোল করেন নবিরুন খাতুন। প্রথমার্ধে বাংলাদেশের চার গোলের তিনটিই এসেছে কর্নার কিক থেকে। বাম দিক থেকে কর্নার নিচ্ছিলেন স্বপ্না, আর ডান দিক সামলেছেন শান্তি। ২০ মিনিটে স্বপ্নার কর্নার থেকে শিখার হেডে আসে একটি গোল।
প্রথমার্ধে সেট পিসে দুর্দান্ত কৌশল দেখানো বাংলাদেশ, দ্বিতীয়ার্ধে সেই ছাপ রাখে ওপেন প্লেতেও। দুই ধরনের পরিস্থিতিতেই দারুণ দক্ষতা দেখিয়েছে আফঈদারা। আগের ম্যাচে স্বাগতিক লাওসকে ৩-১ গোলে হারিয়ে দারুণ শুরু করেছিল বাংলাদেশ। এখন দুই ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ৬, গোল ব্যবধান +১০।
তবে গ্রুপের সবচেয়ে কঠিন প্রতিপক্ষ এখনো বাকি। দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের পরবর্তী ম্যাচ প্রায় অলঙ্ঘনীয় চ্যালেঞ্জ। কোরিয়া গ্রুপের ফেবারিট এবং সম্ভাব্য চ্যাম্পিয়ন। সেই ম্যাচে পয়েন্ট পাওয়া বাংলাদেশের জন্য বাস্তবসম্মত না হলেও, লক্ষ্য এখন পরিষ্কার ভালো গোল ব্যবধান ধরে রেখে সেরা তিন রানার্সআপের তালিকায় জায়গা করে নেওয়া। কারণ সেই তিন দলই পাবে পরের বছর মূল পর্বে খেলার সুযোগ।