তিন বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪৩৬ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

admin
By admin
3 Min Read
জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা। ফাইল ছবি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার অভিযোগে ৪৩৬ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন। এদের প্রায়ই সবাই নিষিদ্ধি ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের মধ্যে যাদের ছাত্রত্ব এরই মধ্যে শেষ হয়েছে তাদের সনদ স্থগিত থাকবে। আর যারা পরীক্ষা ও ভাইভা দিয়েছে তাদের ফলাফল স্থগিত থাকবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বহিষ্কৃতদের মধ্যে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ওয়ালি আসিফ ইনান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়নও রয়েছেন। এ ছাড়া হামলায় মদদ দেওয়ার অভিযোগে ৯ জন শিক্ষককে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা ঘটনাও ঘটেছে।

তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ২৮৯ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ শিক্ষককেও বহিষ্কার করা হয়। এর বাইরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১২৮ জন এবং চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) ১৯ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় গত ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়কালে বিভিন্ন সহিংসতায় জড়িত থাকার কারণে ১২৮ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সোমাবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সংঘটিত সহিংস ঘটনা তদন্তের জন্য গঠিত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে একাধিক সিন্ডিকেট সদস্য নিশ্চিত করেছেন।

বহিষ্কৃতদের বিষয়ে অধিকতর তদন্তের জন্য সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. তাজমেরী এস ইসলামকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে দ্রুত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

বহিস্কারের ঘটনায় শিক্ষার্থীেদর পাশাপাশি বিভিন্ন মহলে প্রতিক্রিয়া চলেছ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের একটি অংশ মঙ্গলবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে ভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ করেন। উপস্থিত শিক্ষার্থীরা বলেন, হামলায় জড়িত অনেক ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের নাম নেই প্রকাশিত তালিকায়। তালিকাটি পূর্ণাঙ্গ নয় এবং বহিষ্কারের তালিকাও নয়।

এদিকে সোমবার রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভা শেষে উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান শিক্ষার্থী বহিষ্কার ও শিক্ষকদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করার কথা জানান।

তিনি জানান, শিক্ষার্থী বহিষ্কার ও শিক্ষকদের চাকরি থেকে বহিষ্কার করার পাশাপাশি ঘটনার তদন্তে একটি অধিকতর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে আরও কয়েকজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করতে স্ট্রাকচার্ড কমিটি গঠন করা হয়েছে। আর হামলার ঘটনায় অভিযুক্তদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম এবং রেজিস্ট্রার আবু হাসান অবসরে চলে যাওয়ায় তাদের পেনশন সুবিধা বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

ওদিকে চুয়েটের ১৯ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। জুলাই আন্দোলনে জনস্বার্থ বিরোধী অবস্থান ও ক্যাম্পাসে শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। তাদের মধ্যে ১২ জনকে আবাসিক হল থেকে, ৪ জনকে দুই বছরের জন্য এবং ৩ জনকে এক বছরের জন্য সকল একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া ২ জনকে সতর্ক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির ২৮১তম সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সোমবার শৃঙ্খলা কমিটির সদস্য সচিব ও ছাত্রকল্যাণ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. মাহবুবুল আলম স্বাক্ষরিত পৃথক ২১টি বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *