ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রশিবির–সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের জিএস প্রার্থী এসএম ফরহাদের প্রার্থিতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদনকারী ছাত্রীকে ‘গণধর্ষণের’ হুমকি দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী। সোমবার আলী হোসেন নামের ওই শিক্ষার্থী ফেসবুকে তাকে ‘গণধর্ষণের’ হুমকি দিয়ে পোস্ট করেন। হুমকি দাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।
আলী হোসেনের এমন পোস্টের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতা, সাধারণ শিক্ষার্থী ও অনেকে ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন। শিবিরের জিএস প্রার্থী এসএম ফরহাদও আলী হোসেনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
ডাকসুতে ‘অপরাজেয় ৭১-অদম্য ২৪’ প্যানেল থেকে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনবিষয়ক সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী এবং রিট দায়ের করা ছাত্রী তার ব্যাখ্যায় বলেন, এস এম ফরহাদের অবস্থান বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে, ফরহাদ নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন এবং তার পদত্যাগের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাই ফরহাদের কর্মকাণ্ড ডাকসুর গঠনতন্ত্রের সঙ্গে ‘সাংঘর্ষিক’।
এর বিরুদ্ধে হুমকি দাতা আলী হোসেন ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘হাইকোর্টের বিপক্ষে এখন আন্দোলন না করে আগে একে গণধর্ষণের পদযাত্রা করা উচিত।’
এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে ডাকসু নির্বাচনে ভিপি প্রার্থী আব্দুল কাদের ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘রিটকারী নারী প্রার্থীকে লিগ্যালি এবং পলিটিক্যালি ডিল না করে তাকে গণধর্ষণের হুমকি দেওয়ার মতো জঘন্য কাজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চলতে দেওয়া হবে না।’
ওই বক্তব্যের জন্য আলী হোসেনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা। ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, ‘রিট করার জন্য তাকে গণধর্ষণের হুমকি দেওয়ার অধিকার আলী হোসেনের নেই। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। তবে সেটাও হতে হবে ডিউ প্রসেসে (যথাযথ প্রক্রিয়ায়)। এটা সুশীলগিরি হলে আমি সুশীল! লাউড অ্যান্ড ক্লিয়ার!’
ছাত্র শিবির প্যানেলের ডাকসুর জিএস প্রার্থী এসএম ফরহাদ ফেসবুক পোস্টে দাবি করেন, অভিযুক্ত আলী হোসেন শিবিরের সঙ্গে জড়িত নন।
পরে রাতে তিনি আলী হোসেনের বিরুদ্ধে আইনি ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে প্রক্টরের কাছে লিখিত আবেদন করেন।
এ বিষয়ে আলী হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।