ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন ঘিরে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। প্রার্থীরা অভিযোগ করেছেন, ‘অপশক্তির প্রভাবে’ নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে। তারা বলছেন, একটি গোষ্ঠী সচেতনভাবে রিটের মাধ্যমে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে।
নির্ধারিত সময় অনুযায়ী ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও হাইকোর্ট নির্বাচনী কার্যক্রম স্থগিত করে ২১ অক্টোবর পর্যন্ত। এরপর শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে জড়ো হন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আবেদনের পর আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ কার্যকর না করার আদেশ দেন। আদালতের এই সিদ্ধান্তের পর শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
এরপর একাধিক প্যানেল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন বানচালের অভিযোগ আনেন।
স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের সহসভাপতি প্রার্থী উমামা ফাতেমা বলেন, ‘যারা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়কে উত্তপ্ত করার চেষ্টা করেছে, তারাই এবার ডাকসুকে ঘিরে একই ষড়যন্ত্র করছে। নির্বাচনের শেষ সময়ে রিটের মাধ্যমে পুরো নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা চলছে। ডাকসু একটি অভ্যন্তরীণ নির্বাচন, এখানে জাতীয় রাজনীতির হস্তক্ষেপ কাম্য নয়।’
ছাত্রদল সমর্থিত সহসভাপতি প্রার্থী আব্দুল ইসলাম খান বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন এমনভাবে নির্বাচন করছে যাতে পেছানোর ফাঁকফোকর রাখা হয়েছে। একজন চিহ্নিত ছাত্রলীগ নেতাকে বৈধতা দিতে হাইকোর্টে রিট দায়ের হয়েছে, আর তার সুবিধা নিচ্ছে বিভিন্ন অপশক্তি।’
‘নির্বাচন সঠিক সময়ে হবে, সেটাকে বানচাল করার সক্ষমতা কারও নেই,’ তিনি যোগ করেন।
অন্যদিকে স্বতন্ত্র সহসভাপতি প্রার্থী শামীম হোসেন মনে করেন, ‘ডাকসু নির্বাচন হলে রাজনৈতিক ক্ষমতাধরদের প্রভাব কমে যেতে পারে। সেই কারণেই কিছু অপশক্তি ষড়যন্ত্র করছে।’
বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ প্যানেলের সহসভাপতি প্রার্থী আব্দুল কাদের বলেন, ‘একজন প্রার্থীর বিরুদ্ধে করা রিটকে কেন্দ্র করে হাইকোর্ট পুরো নির্বাচন স্থগিত করে। এটি শিক্ষার্থীদের অধিকার হরণের শামিল। আগেও ডাকসু নির্বাচন বানচালের চেষ্টা হয়েছে, এবারও একই অপচেষ্টা চলছে। সময়মতো নির্বাচন না হলে শিক্ষার্থীরা প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।’
পরে ডাকসু নির্বাচন স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করে সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার আদালত। ফলে এ নির্বাচনে আপাতত আইনি বাধা রইল না।