ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র নির্বাচনকে (ডাকসু) ঘিরে আলোচনা-সমালোচনার মাঝেই বাড়ছে সাইবার জগতের নানা অপরাধ। এতে প্রধানত নারী প্রার্থীরা হয়ে পড়েছেন নিরাপত্তাহীন। অভিযোগ উঠেছে, তারা ক্রমাগত হেনস্তা, অপতথ্য ও গুজবের শিকার; পাশাপাশি চলছে ট্যাগিং, বডি শেমিং, বুলিং, গুজব, কটুক্তি, বিদ্বেষমূলক প্রচার।
বার্তা সংস্থা ইউএনবি জানায়, ২০১৯ সালের পর ডাকসু নির্বাচনে এবার নারী প্রার্থীদের অংশগ্রহণ তুলনামূলক বেড়েছে। এমনকি এবারের ঘোষিত নয়টি প্যানেলের মধ্যে পাঁচটিতেই নেতৃত্ব দেবেন নারীরা। তাদের মধ্যে ভিপি পদে লড়ছেন দু’জন, জিএস পদে একজন ও সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে আরও দু’জন নারী। এছাড়াও বিভিন্ন প্যানেলের সম্পাদক ও সদস্য পদে রয়েছেন একাধিক নারী প্রার্থী।
এরই মধ্যে ডাকসু নির্বাচনে সবার আগে প্রার্থিতার ঘোষণা দেন উমামা ফাতেমা। এরপর থেকেই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সাবেক এই মুখপাত্রের বিরুদ্ধে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। তিনি কবি সুফিয়া কামাল হলে বাম রাজনীতি বাদে সব দলকে নিষিদ্ধ চান বলেও গুজব ছড়ানো হয়েছে। তবে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে নিজের বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। এমনকি উমামার শারীরিক গঠন নিয়েও সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট দেওয়া এবং কটূক্তি করা হচ্ছে।
উমামা ফাতেমা জানান, তার মূল বক্তব্য হচ্ছে, ‘প্রভোস্ট স্যারের কাছে জমা দেওয়া বিবৃতিতে আমরা সুফিয়া কামাল হলে সব ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকবে লিখে দিয়েছি। ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, শিবির, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদসহ (বাগছাস) যাবতীয় বাম, ডান, ইসলামিক সব দলের রাজনীতি হলে বন্ধ থাকবে।’
অপরদিকে, ছাত্রশিবিরের প্যানেল থেকে এবার ডাকসু নির্বাচন করবেন চার নারী। প্যানেল ঘোষণার পর থেকেই শিবিরের নারী প্রার্থীরা সাইবার অপরাধের শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন ভিপি পদপ্রার্থী আবু সাদিক কায়েম।
তিনি তার ফেসবুকে লেখেন, ‘এবারের ডাকসুতে রাজনৈতিক বলয়ের বাইরেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী প্রার্থী স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, রাজনীতি কিংবা রাজনীতির বাইরে ছাত্রীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ এখনো গড়ে উঠেনি। অব্যাহত কটূক্তি, প্রোপাগাণ্ডা, বিদ্বেষমূলক প্রচার, সাইবার বুলিং ও ট্যাগিংয়ের শিকার হচ্ছেন নারীরা।’
সাদিক কায়েম বলেন, সাইবার বুলিং থেকে ফাতিমা তাসনিম জুমা, সাবিকুন্নাহার তামান্না, উম্মে ছালমা থেকে ডান-বামের কেউই রেহাই পাচ্ছেন না। এমন অপপ্রচারের কারণে অনেক নারী শিক্ষার্থী এখনও রাজনীতিতে ও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন।