রাজধানীর জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন জুলাই আন্দোলনে চোখ হারানো ৪ যুবক বিষপান করেছেন। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তারা সুস্থ আছেন বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।
রোববার দুপুরে হাসপাতালের পরিচালকের রুমে একটি বৈঠক চলাকালে এ ঘটনা ঘটে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
উন্নত চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের পদক্ষেপ না নেওয়ার অভিযোগ তুলে ৪ জন বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলে চিকিৎসকরা জানান। ঘটনার পর পর তাদেরকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করলেও তাদের পরিচয় প্রকাশ করেনি হাসপাতাল কতৃপক্ষ।
হাসপাতালের একাধিক স্টাফ জানিয়েছেন, বিষপানকারী চারজন হলেন শিমুল, মারুফ, সাগর ও আখতার হোসেন। তাদের মধ্যে একজন একমাস আগে সিঙ্গাপুর থেকে চিকিৎসা নিয়ে দেশে এসেছেন। অপর তিনজন দু’দিন আগে পুনরায় হাসপাতালে ভর্তি হন।
রাতে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. শফিউর রহমান বলেন, ‘বিষপানে অসুস্থ চার জনকে দুপুর আড়াইটার দিকে নিয়ে আসা হয়। তারা বর্তমানে সুস্থ আছেন এবং শঙ্কামুক্ত।’
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, রোববার দুপুরে জুলাই ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) সঙ্গে একটি বৈঠক ছিল। হাসপাতালের পরিচালকের রুমে এ বৈঠক চলাকালে চার জন বিভিন্ন দাবি জানাতে সেখানে যান। সিইও তাদের অপেক্ষা করতে বললে তারা ক্ষুব্ধ হন। এক পর্যায়ে তারা সেখানেই বিষপান করেন।
হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন কয়েকজন অভিযোগ করেন, জুলাই আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের দায়িত্ব নেওয়ার কথা বললেও তা বাস্তবে ঘটেনি। দীর্ঘ ৯ মাসেও তাদের উন্নত চিকিৎসা বা পুনর্বাসনের বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। শুধু প্রতিশ্রুতি দিয়ে টালবাহানা করা হচ্ছে। এসব নিয়ে কথা বলতেই চারজন পরিচালকের রুমে গিয়েছিলেন।
জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে আহতদের মধ্যে ৫৫ জন এখানে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের মধ্যে ৪৬ জন সুস্থ আছেন, তাদের হাসপাতালে থাকার প্রয়োজন নেই। তবে তারা মানসিকভাবে ভালো নেই।’
‘তারা আশঙ্কা করছেন, যদি হাসপাতাল থেকে চলে যান, তাহলে তারা পুনর্বাসনসহ বিভিন্ন সংকটে পড়তে পারেন। তাই তারা হাসপাতাল ছাড়তে চাচ্ছেন না। তাদেরই মধ্যে চারজন আজ বিষপান করেছেন। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের পাশের হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বর্তমানে তারা সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন।’