চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থী ও স্থানীয় গ্রামবাসীর মধ্যে টানা দুই দিনের সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা দায়েরের পর বিশেষ অভিযানে ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
হাটহাজারীর ফতেহপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের জোবরা গ্রামে বুধবার অভিযান চালিয়ে ইমরান হোসেন (৩৫), হাসান প্রকাশ হাসাঈন (২২), রাসেল প্রকাশ কালো রাসেল (৩০), আলমগীর (৩৫), নজরুল ইসলাম (৩০), জাহেদ (৩০), আরমান (২৪) ও দিদারুল আলম (৪৬) নামক পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
হাটহাজারী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রূপন নাথ জানান, চবি শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে দুই দিনব্যাপী সংঘর্ষের পর মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ হাটহাজারী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করে। মামলায় ৯৮ জনের নাম উল্লেখ ছাড়াও আরও প্রায় এক হাজার জন অজ্ঞাতনামাকে আসামি করা হয়েছে।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু কাওসার মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘মামলা দায়েরের পরপরই পুলিশের বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে।’

এর আগে, শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট এলাকায় জোবরা গ্রামে এক নারী শিক্ষার্থীকে ভাড়া বাসার দারোয়ান হেনস্তা করেছে বলে অভিযোগ উঠলে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। সংঘর্ষ সেদিন রাত প্রায় সাড়ে তিনটা পর্যন্ত চলে। ওই রাতেই সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিলেও পরদিন রোববার দুপুরে আবার সংঘর্ষে জড়ায় দুই পক্ষ।
এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের কুপিয়ে, ইট ও লোহার রডের আঘাতে আহত করা হয়। তখন উপ-উপাচার্য, প্রক্টর, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা আহত হন। এদিন দিনভর স্থানীয়দের সঙ্গে চবি শিক্ষার্থীদের দফায় দফায় সংঘর্ষে দেড় হাজারের বেশি শিক্ষার্থী আহত হন।
আহতদের মধ্যে দুই শিক্ষার্থীকে নগরীর বেসরকারি একটি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ১১৪ আহত শিক্ষার্থীর মধ্যে ১১১ জন ছাড়পত্র পেয়েছেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চবি’তে জারি করা হয় ১৪৪ ধারা। ক্যাম্পাস এলাকায় সেনাবাহিনীর পাশাপাশি অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায় সতর্ক রয়েছে।