বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (বিএসএএ) চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে (সিপিএ) বন্দরে আসা গিয়ার্ড ও নন-গিয়ার্ড (যন্ত্রচালিত ও অযন্ত্রচালিত) জাহাজের সংখ্যা কমানোর প্রস্তাব পুনর্বিবেচনার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ জানিয়েছে।
২০২৫ সালের ১৯ আগস্ট সিপিএ চেয়ারম্যান বরাবর পাঠানো এক চিঠিতে বিএসএএ চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ এই সিদ্ধান্তের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
তিনি জানান, ২০২৫ সালের ২০ জুলাই অনুষ্ঠিত বৈঠকে এবং ২৪ ও ৩১ জুলাই তারিখে পাঠানো চিঠিতে অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে যে মতামত দেওয়া হয়েছিল, তা যথাযথভাবে বিবেচনা করা হয়নি।
বিএসএএ উল্লেখ করে, বৈঠকে কোনো ধরনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বা ঐকমত্য হয়নি, অথচ ২০ জুলাইয়ের সভার সরকারি কার্যবিবরণীতে তা ভিন্নভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
আরিফ আরও জানান, ৩০ জুলাই জাহাজ পরিচালনাকারী সদস্যদের এক জরুরি সভায় বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় এবং সিপিএ’র ডেপুটি কনজারভেটর বরাবর লিখিতভাবে আপত্তি জানানো হয়। সেই আপত্তির কপি বন্দর কর্তৃপক্ষকেও দেওয়া হয়।
অ্যাসোসিয়েশন আরও অভিযোগ করেছে, বন্দর কর্তৃপক্ষ আলাদাভাবে কিছু অপারেটরকে বৈঠকে ডেকেছে, যা বিএসএএ’র সম্মিলিত অবস্থানকে উপেক্ষা করে করা হয়েছে। অথচ বিএসএএ সকল শিপিং এজেন্টের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন হিসেবে কাজ করে।
চিঠিতে বিএসএএ আরও জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ ভেড়ানো নিয়ে যে বিলম্ব দেখা দিচ্ছিল, তাতে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। বিদ্যমান হ্যান্ডলিং ও সেলিং প্রক্রিয়াগুলো যথাযথভাবে প্রয়োগ করা হলে জাহাজের সংখ্যা কমানোর প্রয়োজন নেই বলেও তারা মন্তব্য করে।
তারা বন্দর কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানায়, প্রস্তাবিত পরিকল্পনা পুনর্বিবেচনা করে তাদের উপস্থাপিত যুক্তিগুলো পর্যালোচনা করতে এবং জাহাজসংখ্যা হ্রাসের প্রস্তাব বাতিল করতে।
এর আগে, ২০২৫ সালের ২৯ জুলাই চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ একটি নির্দেশনা দিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এজেন্টদেরকে প্রত্যাহারযোগ্য জাহাজের তালিকা জমা দিতে বলে। এই নির্দেশনার কারণ হিসেবে আউটার অ্যানকারেজে জাহাজের জট বাড়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।
জবাবে, ৩১ জুলাই শিপিং এজেন্টরা বন্দর কর্তৃপক্ষকে প্রস্তাব দেন যে, তালিকা থেকে ১৫টি জাহাজ কমানোর পরিকল্পনা বাস্তবায়নের আগে যেন তিন মাস সময় দেওয়া হয়।
বন্দর পরিচালনা বিষয়ক ২০ জুলাইয়ের এক সভায় চট্টগ্রাম বন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) এনায়েত করিম জানান, বছরের শুরুতে অনুমোদিত জাহাজের সংখ্যা ছিল ৯৬, যা এখন ১১৮-তে পৌঁছেছে, যার অধিকাংশই হয়েছে অস্থায়ী অনুমোদনের মাধ্যমে।
তিনি বলেন, এই অতিরিক্ত অনুমোদনের ফলে আউটার অ্যানকারেজে জাহাজের জট ও অপেক্ষার সময় বেড়ে গেছে। বছরের শুরুতে যেখানে ৭-৮টি জাহাজ ছিল কিউ-তে, এখন সেখানে গড়পড়তা ১-২ দিনের পরিবর্তে আরও দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
এই পরিস্থিতি সামাল দিতে এবং বন্দরের আন্তর্জাতিক সুনাম রক্ষা করতে এনায়েত করিম পুনরায় জাহাজসংখ্যা ৯৬-১০০ এর মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার সুপারিশ করেন।