কলকাতায় হোটেলে আগুন লেগে নিহত ১৪

টাইমস রিপোর্ট
3 Min Read
কলকাতার বড়বাজারের মেছুয়ায় একটি হোটেলে মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) আগুন লাগে। ছবি: আনন্দবাজার ডটকম
Highlights
  • প্রবল ধোঁয়ার জেরে হোটেলটি ‘গ্যাসচেম্বার’-এ পরিণত হয়। ফলে সেখানে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঢুকতে পারছিলেন না। তারা মই দিয়ে চার ও পাঁচ তলার ঘরের জানলা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। তারপর একে একে হোটেলের অতিথিদের উদ্ধার করা হয়।

ভারতের কলকাতার একটি হোটেলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অন্তত ১৪ জন মারা গেছেন। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ১১ জন পুরুষ, এক মহিলা এবং দুই শিশু।

পুলিশ সূত্রের বরাত দিয়ে আজকাল ডটকমের খবরে বলা হয়, নিহত ১৪ জনের মধ্যে ৮ জনের দেহ শনাক্ত করা হয়েছে। বাকিদের শনাক্ত করার কাজ চলছে। এ ঘটনায় আহত ১৩ জনের মধ্যে ১২ জনকেই প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন এক জন।

নিহতদের পরিবারকে ২ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আহতদের ক্ষতিপূরণ হিসাবে দেওয়া হবে ৫০ হাজার টাকা।

ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ মধ্য কলকাতার বড়বাজারের মেছুয়ার ফলপট্টির ওই হোটেলে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় ৮ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। বুধবারেও (৩০ এপ্রিল) চলছে উদ্ধারকাজ।

পুলিশ জানিয়েছে, ছ’তলার ওই হোটেলের দোতলায় আগুন লেগেছিল। এরপর অন্যান্য তলায়ও আগুন ছড়িয়ে পড়ে। হোটেলের ৪২টি ঘরে তখন ৮৮ জন অতিথি ছিলেন।

বুধবার সকালে শোকপ্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। এক্স পোস্টে তিনি লেখেন, ‘বড়বাজারের অগ্নিকাণ্ডে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। হোটেলে দাহ্য পদার্থ মজুত থাকার কারণেই এত জনের মৃত্যু হয়েছে। সারা রাত ধরে আমি উদ্ধারকাজের খোঁজখবর নিয়েছি। এলাকায় সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় দমকলের ইঞ্জিন মোতায়েন করারও ব্যবস্থা করেছি। ঘটনার তদন্ত করা হবে। নিহতদের পরিবারের প্রতি আমার সহমর্মিতা রইল।’

কলকাতার নগরপাল মনোজ বর্মা জানিয়েছেন, কী ভাবে আগুন লাগল তা খতিয়ে দেখার জন্য বিশেষ তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে। তদন্তপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বুধবার ঘটনাস্থলে ফরেন্সিক দলের আসার কথাও রয়েছে। তারা পুরো ঘটনাটি তদন্ত করে দেখবে। কোনও গাফিলতি ছিল কি না, কেন অগ্নিকাণ্ডের সাথে সাথেই অতিথিদের বের করা গেল না, সব কিছু তদন্ত করে দেখা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

কলকাতার সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ এবং বিধান সরণির সংযোগকারী রাস্তার মেছুয়ার ফলপট্টির ওই হোটেলটি বেশ ঘিঞ্জি এলাকায়। যে হোটেলে আগুন লেগেছে তার আশপাশে প্রচুর দোকান ও বাড়ি রয়েছে। ফলে দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা ছিল। কিন্তু এর আগেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিস।

পুলিশ সূত্রে খবর, আনন্দ পাসোয়ান নামে এক ব্যক্তি আগুন থেকে বাঁচতে হোটেলের কার্নিশ থেকে নীচে ঝাঁপ দেন। আহত অবস্থায় তাকে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে মৃত বলে ঘোষণা দেন চিকিৎসকরা।

স্থানীয় সূত্রে খবর, প্রবল ধোঁয়ার জেরে হোটেলটি ‘গ্যাসচেম্বার’-এ পরিণত হয়। ফলে সেখানে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঢুকতে পারছিলেন না। তারা মই দিয়ে চার ও পাঁচ তলার ঘরের জানলা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। তারপর একে একে হোটেলের অতিথিদের উদ্ধার করা হয়।

আতঙ্কিত হয়ে বেশ কয়েক জন হোটেলের কার্নিশে চলে আসেন। উদ্ধারকারীরা মই দিয়ে তাদের নামিয়ে আনেন। জানা গিয়েছে, হোটেলটিতে পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও অন্যান্য রাজ্যের অতিথিরা ছিলেন।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *