রাখাইনে ‘মানবিক করিডোর’ দেওয়ার বিষয়টি এখনো ‘বিবেচনায়’ আসেনি বলে জানিয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান। তিনি বলেন, ‘যদি তা বিবেচনায় আসে তখন সরকার সকল পক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসে সিদ্ধান্ত নেবে।’
রাখাইনে মানবিক করিডোর নিয়ে বুধবার বিকালে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিং-এ তিনি এ কথা বলেন।

দেশের কোন এলাকা দিয়ে রাখাইনে ‘মানবিক করিডোর’ দেওয়া হতে পারে, এমন প্রশ্নের জবাবে খলিলুর রহমান বলেন, ‘আগে রোগী হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। তারপর সেখানে চিকিৎসা হবে। আমরা আলোচনায় সে জায়গায় যাই-ই নাই।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এ নিয়ে যদি আলোচনা হয়, সকল পক্ষ যদি এ নিয়ে রাজি হয়, আবারও বলছি, কোনো কিছুই কিন্তু রাজি-টাজি হয় নাই। এখনো সে পর্যায়ে যাই-ই নাই। সে পর্যায়ে গেলে সবার সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেব।’
তিনি যোগ করেন, ‘সেখানে আমাদের নিজস্ব বিবেচনা আছে। এ ধরনের বিষয়ে যদি আমরা সম্মত হই, তাহলে রুটগুলো দেখতে হবে। আমাদের নিরাপত্তা (সেফটি ও সিকিউরিটি) দেখতে হবে। আমাদের রাস্তাঘাট কোনগুলো ব্যবহার হবে, সেগুলো দেখতে হবে। অন্যকিছু চলে যাচ্ছে কি না, সেটি দেখতে হবে। বহুকিছু বিবেচনার বিষয় আছে। এটি কী একজনের সিদ্ধান্ত নাকি? কেবল সরকার নয়, সমস্ত অংশীদারের সাথে বসে সিদ্ধান্ত নেব।’
যুদ্ধ পরিস্থিতিতে রাখাইনে খাদ্য ও অষুধের অভাব থাকায় রোহিঙ্গাদের আবারও বাংলাদেশে ঢোকার আশঙ্কা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের ৯০ ভাগ দখল এখন সেদেশের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ) নিয়েছে জানিয়ে খলিলুর রহমান বলেন, ‘দেশটিতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আরাকান আর্মি ও জান্তা সরকারের সঙ্গে সমান্তরাল আলোচনা চলছে।’
এ পর্যন্ত উভয়পক্ষের আলোচনা এপারে আশ্রয় নেওয়া প্রায় এক লাখ ৭০ হাজার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর পরিচয় যাচাই-বাছাই সম্ভব হয়েছে বলেও জানান তিনি।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান গত মাসে জাতিসংঘ প্রস্তাবিত করিডোরে সরকারের ‘নীতিগত সম্মতি’র কথা বলেছিলেন। তাদের মতে, এই করিডোর রোহিঙ্গা ও অন্যান্য বিপন্ন জনগণের জন্য ত্রাণ সহায়তা পৌঁছানোর রাস্তা।
এর আগে গত মার্চে কক্সবাজার সফরে গিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস মিয়ানমারের সংঘাতপূর্ণ রাখাইনে বিপন্ন মানুষের জন্য মানবিক সাহায্য পৌঁছাতে একটি মানবিক করিডোর স্থাপনের প্রস্তাব করেন।
অন্তর্বর্তী সরকার জাতিসংঘের প্রস্তাবে নীতিগত সম্মত থাকার কথা জানানোর পর থেকেই রাজনৈতিক দল ও বিশ্লেষক মহলে শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল একে দেশের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ বলে বর্ণনা করে।