রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় করা চাঁদাবাজির একটি মামলায় মডেল মেঘনা আলমকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেছে আদালত। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী।
পিপি জানান, গত বছর এপ্রিলে মেঘনার পরিচিত ব্যবসায়ী দেওয়ান সমিরের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা হয়। তদন্তে মেঘনার সংশ্লিষ্টতা উঠে এলে পুলিশ তার বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করে। আদালত তা মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে, ভাটারা থানায় করা আরেক চাঁদাবাজির মামলায় ১১ এপ্রিল গ্রেপ্তার হন দেওয়ান সমির। ওই মামলায় তিনি বর্তমানে রিমান্ডে রয়েছেন।
১০ এপ্রিল রাতে ডিবি পুলিশ মেঘনাকে রাজধানীর বসুন্ধরার বাসা থেকে আটক করে। পরদিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে তাকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিনের আটকাদেশে কারাগারে পাঠানো হয়। তবে আটকের কারণ স্পষ্ট না হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়।
মেঘনার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিঘ্ন, ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্কে অবনতি ঘটানোর চেষ্টা এবং দেশের অর্থনৈতিক ক্ষতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছে বলে বিবৃতিতে জানায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
গত রোববার (১৩ এপ্রিল) আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল প্রেস ব্রিফংয়ে স্বীকার করে বলেন, মেঘনার আটক প্রক্রিয়া সঠিক হয়নি।
সেদিনই, মেঘনাকে আটকের প্রক্রিয়া নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে রোববার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) প্রধানের পদ থেকে রেজাউল করিম মল্লিককে সরিয়ে দেওয়া হয়। তাকে সংযুক্ত করা হয় ডিএমপি সদর দপ্তরে।
রোববারই মেঘনার বাবা বদরুল আলম রিট করলে আদালত তা আমলে নেয়। আদালত জানতে চেয়েছে, পরোয়ানা ছাড়া আটক, গ্রেপ্তারের কারণ না জানানো, ২৪ ঘণ্টার বেশি হেফাজতে রাখা ও আইনজীবী না পাওয়ার সুযোগ কেন বেআইনি নয়। পাশাপাশি বিশেষ ক্ষমতা আইনে আটকাদেশের আইনগত বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
মামলার পরবর্তী শুনানির অপেক্ষায় আছেন সংশ্লিষ্টরা।
সবশেষ, মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) প্রচলিত আইনেই মডেল মেঘনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের জানান প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী। মেঘনাকে আটকের ঘটানাটি ‘বেআইনি কোনো পদক্ষেপ নয়’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এ নিয়েও বিভিন্ন মহলে দেখা দেয় তীব্র প্রতিক্রিয়া।