জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্তির আন্দোলনে জড়িত থাকার অভিযোগে কাস্টমস ক্যাডারের আরও চার কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
সোমবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তররীণ সম্পদ বিভাগের শুল্ক-২ শাখা থেকে জারিকৃত পৃথক চার পৃথক চার প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এসব কর্মকর্তাদের বরখাস্তের কথা জানানো হয়।
বরখাস্ত হওয়া চার কর্মকর্তারা হলেন–অতিরিক্ত কমিশনার সাধন কুমার কুন্ড এবং আবুল আলা মোহাম্মদ আমীমুল ইহসান খান, যুগ্ম কমিশনার মো. সানোয়ারুল কবির এবং উপ কমিশনার মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ১২ মে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫ জারির পর এর বিরোধিতা করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট এবং আয়কর বিভাগের কর্মচারীদের কর্মসূচি চলাকালীন দায়িত্বরত কর্মচারীদের দাপ্তরিক কাজ সম্পাদনে বাধা এবং কাজ ফেলে রাজস্ব ভবনে আসতে বাধ্য করতে সংগঠকের ভূমিকা পালনের মাধ্যমে দেশের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করায় এসব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় কার্যধারা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ধারা-৩৯(১) অনুযায়ী তাদের কে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিয়োগপূর্বক চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো বলেও প্রজ্ঞাপনে বলা হয়।
এর আগে ২ জুলাই এনবিআরের কর বিভাগের সদস্য মো. আলমগীর হোসেন, মূসক নীতির সদস্য মো আবদুর রউফ, শুল্ক নীতির সদস্য হোসেন আহমদ ও বরিশালের কর কমিশনার মো. শব্বির আহমদকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। এর আগের দিন ১ জুলাই রাতে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার মো. জাকির হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করে সরকার। বরখাস্তের পর তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) হিসেবে এনবিআর-এ সংযুক্ত করা হয়।
এ ছাড়া ১৫ জুলাই বদলির আদেশ অবজ্ঞা করে প্রকাশ্যে ছিঁড়ে সরকারি আদেশ অমান্য করার অভিযোগে ১৪ জন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এর মধ্যে আয়কর বিভাগের ৯ জন এবং কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের ৫ জন কর্মকর্তা ছিল। বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তাদের বেশিরভাগ এনবিআর বিলুপ্তির অধ্যাদেশ বাতিল, এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণসহ চার দাবিতে ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ আহ্বানে চলা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
এ বছরের ১২ মে এনবিআর বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা—এই দুটি বিভাগ করার অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। এর পর থেকে এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সব পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে প্রায় ৬১ দিন ধরে আন্দোলন করেন।
সর্বশেষ ২৮ ও ২৯ জুন ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ও ‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। ঘোষণা অনুযায়ী, সব কাস্টম হাউস, ভ্যাট কমিশনারেট ও আয়কর অফিসের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। কাস্টম হাউস বন্ধ থাকায় এবং আন্দোলনের কারণে আমদানি-রপ্তানিতে ব্যাপক প্রভাব পড়ে। পরে ব্যবসায়ীদের মধ্যস্থতায় আন্দোলন প্রত্যাহার করে ঐক্য পরিষদ।