ইসির শুনানিতে বিএনপির মারামারি কেন্দ্র দখলের টেস্ট ম্যাচ: হাসনাত

টাইমস রিপোর্ট
4 Min Read
হাসনাত আব্দুল্লাহ, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল), এনসিপি। ফাইল ছবি
Highlights
  • ‘বিএনপির একজন নেত্রী বলছেন-আমরা চাইলে এখানে গুন্ডা নিয়ে আসতে পারতাম। অর্থাৎ গুন্ডার পৃষ্ঠপোষকতা উনারা দিয়ে আসছেন।’

সংসদীয় আসনের সীমানা পুননির্ধারণ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের শুনানিতে বিএনপি ও এনসিপির নেতাকর্মীদের মারামারিকে ভোটকেন্দ্র দখলের টেস্ট ম্যাচ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ।

রোববার বিকালে নির্বাচন কমিশনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘বর্তমান নির্বাচন কমিশন পিক অ্যান্ড চুজ পদ্ধতিতে গঠিত হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের ভূমিকাকে আমরা সবসময় প্রশ্নবিদ্ধ করেছি। আজকের ন্যাক্কারজনক ঘটনাটির সাক্ষী হয়েছে পুরো বাংলাদেশ। আগামী নির্বাচন কেমন হতে পারে এবং সেই নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা কি হবে এবং বিএনপি কি ভূমিকা রাখবে আজকে সেটি প্রমাণ হয়ে গিয়েছে।’

‘বিএনপির একজন নেত্রী বলছেন-আমরা চাইলে এখানে গুন্ডা নিয়ে আসতে পারতাম। অর্থাৎ গুন্ডার পৃষ্ঠপোষকতা উনারা দিয়ে আসছেন। আমরা দেখছি নির্বাচন কমিশনের বাইরে লাঠিসোটা নিয়ে মহড়া দিচ্ছে। নির্বাচন কমিশন অফিসের যদি এই অবস্থা হয়, সারা বাংলাদেশ এই বিএনপির যারা রয়েছে-এই গুন্ডাদের পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে-তারা কিভাবে ভোট কেন্দ্র দখল করবে সেটির আজকে হচ্ছে টেস্ট ম্যাচ হয়ে গিয়েছে।’

এর আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই ও তিন নম্বর সংসদীয় আসনের সীমানা নিয়ে নির্বাচন কমিশনে শুনানি চলাকালে হাতাহাতিতে জড়ান বিএনপি নেতা রুমিন ফারহানার অনুসারী এবং এনসিপির নেতাকর্মীরা।

নির্বাচন কমিশনের আপত্তি-শুনানিতে উপস্থিত সিইসি এএমএম নাসির উদ্দিন ও অন্যান্য কমিশনারদের সামনেই এই হাতাহাতি হয়। ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ চেষ্টা করেও দুই গ্রুপের মারামারি থামাতে ব্যর্থ হন।

নিজের বক্তব্যে রুমিন ফারহানার বিভিন্ন সমালোচনা করেন হাসনাত। রুমিন ফারহানাকে আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী হিসেবেও আখ্যা দেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘আজকে নির্বাচন কমিশন যে ভূমিকা রেখেছেন, আমরা সেই ভূমিকাকে সবসময় প্রশ্নবিদ্ধ করে এসেছি। আমরা পুলিশকে দেখেছি এখানে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে। আমরা দেখলাম পুলিশ আমাদের নেতাকর্মীদেরকে কিভাবে নির্বাচন কমিশনে ঢুকতে বাধা দিয়েছে। অন্যদিকে বিএনপির নেতাকর্মীদেরকে কিভাবে ফ্রি এক্সিট দিয়েছে।’

নির্বাচন কমিশন কিছু দলের কার্যালয় হয়ে গেছে বলেও অভিযোগ তার।

হাসনাত বলেন, ‘একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দিকে আমরা যেতে চাই। বাংলাদেশের মানুষ গণতান্ত্রিক উত্তোরণের জন্য অপেক্ষা করছে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ আবার গুন্ডাতন্ত্রের দিকে যেতে চায় না। গ্রহণযোগ্য অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের জন্য এই নির্বাচন কমিশনকে আমরা বস্তুনিষ্ঠ-পেশাদারিত্বের ভূমিকায় দেখতে চাই। নির্বাচন কমিশন যেভাবে একটি দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নে নির্লজ্যের মত কাজ করছে, সেটি আমরা যে নির্বাচনমুখী হচ্ছি সেটির অন্তরায় বলে মনে করছি।’

পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশেও হুঁশিয়ারি দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এইা সাবেক সমন্বয়ক। তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন নির্বাচনের আগের রাতে যেই পুলিশরা টাকা খেয়ে নির্বাচন করে দিয়েছে তাদের আজকে পরিণতি কী হয়েছে। আপনারা জনগণের পক্ষে থাকেন, জনগণ আপনাদেরকে বাঁচাবে। কোনো রাজনৈতিক দল আপনাদেরকে শেল্টার দিতে পারবে না।’

সকালের ঘটনার বিষয়ে ইসিতে অভিযোগ করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দিয়ে যাব এবং আমরা পর্যবেক্ষণ করব নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেয়।’

এনপিসির যুগ্ম সদস্য সচিব জয়নাল আবেদীন শিশির অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা শুরু থেকেই বলেছি-এই নির্বাচন কমিশনের ইট থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি কর্মকর্তা আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। তার প্রমাণ দেখতে পেয়েছি এখানে। আমাদের দলের সর্বোচ্চ সিনিয়র নেতাদেরকে হামলা করা হয় ইসির উপস্থিতিতে এবং ইসির সামনে আমাদের নেতাদেরকে হামলা করে সন্ত্রাসীরা নির্বিঘ্নে বের হয়ে যায়।’

‘আমরা ইসির কাছে কোনো দয়া চাইতে আসি নাই। আমরা বারবার বলেছি এই নির্বাচন কমিশন বিএনপির দপ্তর সম্পাদকের, এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে বাংলাদেশের সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া সম্ভব না। যার প্রমাণ ইসির সামনে এনসিপির সর্বোচ্চ নেতাদেরকে হামলা করা হয়।’

 

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *