দিনাজপুরের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এখন ফলছে বিদেশি ফল রামবুটান। গাছে গাছে ঝুলে থাকা এই বাহারি ফল এ অঞ্চলের শোভায় শুধু বাড়াচ্ছে না, বাজারেও এটির আশানুরূপ দাম পাওয়ায় ফলটি চাষে আগ্রহ বাড়ছে স্থানীয় চাষিদের।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার স্থানীয় ফল হিসাবে পরিচিত রামবুটান দেখতে অনেকটা লিচুর মতো হলেও এর ত্বক লোমশ এবং এটি আকারে কিছুটা বড়। মাঝারি আকারের এই ফলটি সাধারণত লাল রঙের হয়ে থাকে। এটি মূলত চীন, মালয়েশিয়া, শ্রীলঙ্কা ও ইন্দোনেশিয়ায় বেশি উৎপাদিত হয়।
সরেজমিনের খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দিনাজপুরের মাটি ও জলবায়ু এই ফলের জন্য বেশ উপযোগী হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে রামবুটান চাষের সম্ভাবনা বেশ উজ্জ্বল বলে মনে করছেন স্থানীয় চাষিরা। রামবুটান চাষ করে যারা সফল হয়েছেন, তাদেরই একজন নবাবগঞ্জের কপালদাড়া গ্রামের কৃষক আবদুর রহমান। তার রামবুটান বাগান দেখতে প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছেন দর্শনার্থীরা। কেউ আসছেন ফলটি দেখতে, আবার কেউবা জানতে চাইছেন চাষের পদ্ধতি।
আবদুর রহমান জানান, প্রবাসে থাকার সময় তিনি এই ফলটি সম্পর্কে জানতে পারেন। দেশে ফিরে বীজ থেকে চারা তৈরির চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এরপর ফরিদপুর থেকে ১০টি চারা এনে নিজের জমিতে রোপণ করেন। এ বছর সেগুলোর মধ্যেই তিনটি গাছে ব্যাপক ফলন হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘প্রতিটি গাছে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ কেজি ফলন হয়েছে। সম্পূর্ণ পাকার আগেই বাগান থেকেই প্রতি কেজি এক হাজার টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে।’
জৈবসার আর অল্প সেচ ব্যবহার করেই রামবুটানের চাষ করা সম্ভব বলে জানান তিনি।
নবাবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তাপস কুমার রায় বলেন, ‘পুষ্টিগুণসম্পন্ন এই ফলটি আমাদের অঞ্চলে নতুন। কৃষক আবদুর রহমান অত্যন্ত সফলভাবে এ ফলের চাষ করেছেন। তাকে দেখে অনেকেই রামবুটান চাষে আগ্রহী হওয়াতে, কৃষি বিভাগ থেকে আমরা তাদের সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছি।’
রামবুটানের সফল চাষাবাদ দিনাজপুরের কৃষিক্ষেত্রে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। স্থানীয় কৃষি বিভাগ আশা করছে, এই বিদেশি ফলের বাণিজ্যিক চাষাবাদ চাষিদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।