নববর্ষ ১৪৩২-কে বরণ করে নিতে রাজধানীর রমনার বটমূলে সূর্যোদয়ের পর শুরু হয় ছায়ানটের ঐতিহ্যবাহী বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। ভোরের আলো ফুটতেই সোমবার (১৪ এপ্রিল) ভোর সোয়া ৬টায় আহির ভৈরব রাগে বাঁশির সুরে সূচনা হয় এবারের আয়োজনের।
নববর্ষের এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে রাজনৈতিক পালাবদলের পর এটি প্রথম পয়লা বৈশাখ উদযাপন। এই পরিবর্তনের আবহেই দেশজুড়ে বর্ষবরণ হচ্ছে নতুন চেতনায়। ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নামে পরিচিত ঐতিহ্যবাহী আয়োজনটি এবার পালিত হচ্ছে নতুন নামে—‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’।
ছায়ানটের রমনার আয়োজনের মূল সুর ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’। আলো, প্রকৃতি, দেশপ্রেম এবং মানবিকতার সুরে সাজানো হয়েছে অনুষ্ঠানটি। বৃক্ষবেদীর পূর্ব-পশ্চিমে অর্ধবৃত্তাকারে তৈরি করা ৭২ ফুট দীর্ঘ ও ৩০ ফুট প্রশস্ত মঞ্চে চলে ছায়ানটের ৫৮তম নববর্ষ আয়োজন।

ছায়ানট জানিয়েছে, এবারে মোট ২৪টি পরিবেশনার মধ্যে ৯টি সম্মেলক গান, ১২টি একক কণ্ঠের পরিবেশনা ও ৩টি পাঠ রয়েছে। নববর্ষের কথন পাঠ করেন ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি সারওয়ার আলী। অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হবে জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে।
শিল্পীদের পোশাকে ও মঞ্চের সাজসজ্জাতেও ছিল বার্তার প্রতিফলন। পুরুষ শিল্পীরা মেরুন রঙের পাঞ্জাবি ও সাদা পায়জামা, নারীরা মেরুন পাড়ের অফ হোয়াইট শাড়িতে সেজেছেন। মঞ্চের রঙেও আনা হয়েছে সামঞ্জস্য।
১৯৬৭ সাল থেকে সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানট রমনার বটমূলে নিয়মিত এ আয়োজন করে আসছে। রমনার প্রাচীন বটগাছটি ঝড়ে ভেঙে পড়ার পর পাশের অশ্বথবৃক্ষকে ঘিরে প্রতি বছর হয় পহেলা বৈশাখের এ আয়োজন। এবার ১৪৩২ বঙ্গাব্দকে বরণ করতে বিগত তিন মাস ধরে নগরীর ধানমন্ডির ছায়ানট ভবনে চলে মহড়া। মূল মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু হয় গত ৮ এপ্রিল।বর্ষবরণ উপলক্ষে রাজধানীতে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ, নিরাপত্তায় ছিল কড়া নজরদারি।