আফগানিস্তানে প্রাণহানি বেড়ে ৮০০, আহত ২৫০০

টাইমস রিপোর্ট
3 Min Read
আফগানিস্তানে হতাহতদের উদ্ধারে মরিয়া স্বজন ও উদ্ধারকর্মীরা। ছবি: এপি/ইউএনবি
Highlights
  • তলেবান মুখপাত্র জবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেন, ‘প্রাণ বাঁচাতে দেশের সব ধরনের সম্পদ ব্যবহার করা হবে।’

আফগানিস্তানে শক্তিশালী ভূমিকম্পে বেড়ে চলেছে মৃতের সংখ্যা। সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, ইতোমধ্যে ৮০০ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে কর্তৃপক্ষ। আহত হয়েছেন দুই হাজার ৫০০ জনের বেশি মানুষ।

তালেবান সরকারের বরাতে বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) এ তথ্য জানিয়েছে। আফগান সরকারের মুখপাত্র জবিহুল্লাহ মুজাহিদ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, নিহতের সংখ্যা ৮০০ তে পৌঁছেছে এবং আহতের সংখ্যা ২ হাজার ৫০০। অধিকাংশ হতাহত কুনার প্রদেশে।

এপি’র প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ভূমিকম্পের পর থেকে নিখোঁজ স্বজনদের উদ্ধারে মরিয়া হয়ে ধ্বংসস্তূপ খুঁড়তে শুরু করেছেন স্বজনরা। সেইসঙ্গে ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়া হতাহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পৌঁছে দিতে উদ্ধারকারী দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন স্থানীয়রা।

রোববার গভীর রাতে ৬ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে দেশটির সীমান্তবর্তী কুনার ও নানগারহার প্রদেশে। এতে পুরোপুরি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে জালালাবাদ শহরসহ কুনারের অন্তত চারটি গ্রাম।

মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউজিএস) জানায়, স্থানীয় সময় রাত ১১টা ৪৭ মিনিটে ভূমিকম্পটি আফগানিস্তানে আঘাত হানে। যার কেন্দ্র জালালাবাদের পূর্ব-উত্তর-পূর্বে ২৭ কিলোমিটার দূরে, ভূপৃষ্ঠ থেকে ৮ কিলোমিটার গভীরে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অগভীর ভূমিকম্পে সাধারণত ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়। মূলত ভূমিকম্পের পর বেশ কয়েকটি মৃদু ভূকম্পনে ঘরবাড়ি, স্থাপনা ধসে পড়ে। তা ছাড়া, গভীর রাতে বেশিরভাগ মানুষই ঘুমিয়ে থাকায় অনেকেই নিরাপদে সরে যাওয়ার সুযোগ পাননি। আফগানিস্তানের ভবনগুলো সাধারণত নিচু, কংক্রিট ও ইটের তৈরি। অসংখ্য ঘর কাঁচা মাটি ও কাঠের তৈরি।

কুনারের নুরগাল জেলার এক বাসিন্দা জানান, পুরো গ্রামই ধ্বংস হয়ে গেছে। তিনি আর্তনাদ করে বলেন, ‘শিশু, বৃদ্ধ, তরুণ… সবাই ধ্বংসস্তূপের নিচে। আমাদের সাহায্য দরকার। মরদেহগুলো সরানোর মতোও লোকজন নেই।’

এর আগে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শরাফত জামান জানান, কুনার, নানগারহার ও রাজধানী কাবুল থেকে চিকিৎসক দল ইতোমধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। তবে এখনো অনেক এলাকা থেকে হতাহতের সঠিক খবর আসেনি, কাজেই হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও বাড়ার শঙ্কা জানান তিনি।

আফগানিস্তানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের ভিডিওতে দেখা যায়, উদ্ধারকর্মীরা আহতদের ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করে হেলিকপ্টারের সাহায্যে নিকটস্থ হাসপাতালে পৌঁছে দিচ্ছেন। অনেকে খালি হাতেই ধ্বংসস্তূপ খুঁড়ে হতাহতদের বের করার চেষ্টা করছেন।

তলেবান মুখপাত্র জবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেন, ‘প্রাণ বাঁচাতে দেশের সব ধরনের সম্পদ ব্যবহার করা হবে।’

এর আগে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর আফগানিস্তানে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্পে অন্তত ৪ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। ওই ভূমিকম্পই সাম্প্রতিক ইতিহাসে আফগানিস্তানের সবচেয়ে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *