আগস্টে দেশে ৪৯৭ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫০২ জন নিহত, এক হাজার ২৩২ জন আহতের তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে মোটরসাইকেলের দুর্ঘটনাই ছিল ১৬৫টি। এসব দুর্ঘটনায় ১৭৬ জন নিহত এবং ১৪৪ জন আহত হয়েছে। যা মোট দুর্ঘটনার ৩৩ দশমিক ১৯ শতাংশ, নিহতের ৩৫ দশমিক ০৫ শতাংশ ও আহতের ১১ দশমিক ৬৮ শতাংশ।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেল গণমাধ্যম পর্যবেক্ষণ করে এসব তথ্য জানিয়েছে। বুধবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই প্রতিবেদন তুলে ধরে সংগঠনটি। দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌ পথের দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
গত মাসে সড়ক, রেল ও নৌ-পথে ৫৫২ টি দুর্ঘটনায় ৫৬৩ নিহত এবং আহত হয়েছে ১২৬১ জন। এর মধ্যে রেলপথে ৩৪ দুর্ঘটনায় ৩৪ জন নিহত এবং ০৭ জন আহত হয়েছেন।
এ ছাড়া নৌ পথে ২১ টি দুর্ঘটনায় নিহত ২৭ এবং আহত ২২ ছাড়াও ১৩ জন নিখোঁজ। এই মাসে ঢাকা বিভাগে সর্বোচ্চ ১৩২ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১২৮ জন নিহত ও আহত হয়েছে ৩৩৩ জন।অন্যদিকে, সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে বরিশাল বিভাগে। এ বিভাগে ১৫ সড়ক দুর্ঘটনায় ১৪ জন নিহত ও ২২ জন আহত হয়েছে।
এতে বলা হয়, সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে ১২ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ১৬২ জন চালক, ৮২ জন পথচারী, ১৯ জন পরিবহন শ্রমিক, ৯৭ জন শিক্ষার্থী, ১১ জন শিক্ষক, ৯৫ জন নারী, ৪২ জন শিশু, একজন মুক্তিযোদ্ধা, একজন আইনজীবী, তিনজন সাংবাদিক এবং ২৬ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে।
এদের মধ্যে একজন পুলিশ সদস্য, একজন সেনা সদস্য, একজন ফায়ার সার্ভিস সদস্য, একজন মুক্তিযোদ্ধা, একজন আইনজীবী, ১৪২ জন বিভিন্ন পরিবহনের চালক, ৮২ জন পথচারী, ৭৩ জন নারী, ৩৮ শিশু, ৫১ জন শিক্ষার্থী, সাতজন পরিবহন শ্রমিক, সাতজন শিক্ষক ও ১১ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী এসব দুর্ঘটনায় নিহত হন।
এই সময় সড়ক দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ৭৮৯ টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে। সেগুলোর মধ্যে ২৬ দশমিক ১০ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২৪ দশমিক ৭১ শতাংশ ট্রাক-পিকাপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ১৫ দশমিক ৮ শতাংশ বাস, ১৩ দশমিক ৬৮ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিক্সা ও ইজিবাইক, ৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিক্সা, ৬ দশমিক ৫৯ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনাসহ ৬ দশমিক ৪৬ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস রয়েছে।
সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৪৪ দশমিক ৬ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ায়, ৩০ দশমিক ৩৮ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষে, ১৯ দশমিক ১৯ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ৩ দশমিক ৮২ শতাংশ অন্যান্য কারণে, শূন্য দশমিক ৬০ শতাংশ চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে এবং ১ দশমিক ২০ শতাংশ ট্রেন ও অন্যান্য যানবাহনের সংঘর্ষে ঘটেছে।
এসব দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত মাসে মোট দুর্ঘটনার ৪৫ দশমিক ৭ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ২০ দশমিক ৩২ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে। এ ছাড়াও সারা দেশের মোট দুর্ঘটনার ৫ দশমিক ৩ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ১ দশমিক ৮১ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ১ দশমিক ২০ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে ঘটেছে।