গ্রামবাসীর সঙ্গে সংঘর্ষে আহত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে নগরীর বেসরকারি একটি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ১১৪ আহত শিক্ষার্থীর মধ্যে ১১১ জনই ছাত্রপত্র পেয়েছেন।
বেসরকারি পার্কভিউ হাসপাতালে আইসিইউতে থাকা দুইজন হলেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ সায়েম ও একই শিক্ষাবর্ষের সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ মামুন একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও পাঁচ শিক্ষার্থী।
এছাড়া চট্টগ্রামে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এখনও চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনজন। এদের মধ্যে রয়েছেন ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৯- ২০ শিক্ষাবর্ষের মোহাম্মদ ইসমাইল এবং রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের পলাশ মোল্লা।
এর আগে গুরুতর আহত অবস্থায় নাইমুল ইসলাম নামের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে রোববার রাতেই উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
পার্কভিউ হাসপাতালের আইসিইউতে দায়িত্বরত চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ইমতিয়াজ ও মামুনের রোববার রাতে অস্ত্রোপচার হয়েছে। এরপর থেকেই দুজন লাইফ সাপোর্টে। মামুনের অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে, বিকালে তার লাইফ সাপোর্ট খুলে নেওয়া হতে পারে। তবে ইমতিয়াজের অবস্থা এখনো আশঙ্কাজনক।
পার্কভিউ হাসপাতালের আইসিইউর কনসালট্যান্ট মোহাম্মদ আমীন বলেন, ‘দুই শিক্ষার্থীর মাথার খুলি ও মস্তিষ্কে গুরুতর আঘাত লেগেছে। দুজনেরই রক্তক্ষরণ হয়েছে প্রচুর। মামুনের শারীরিক রেসপন্স আগের চেয়ে ভালো। তবে ইমতিয়াজের বিষয়ে এখনো কিছু বলা যাচ্ছে না।’
ছেলে আহত হওয়ার খবর শুনে হেলিকপ্টারে বগুড়া থেকে চট্টগ্রামে পৌঁছেছেন ইমতিয়াজ সায়েমের মা শাহনাজ আমির।
তিনি টাইমস অব বাংলাদেশকে বলেন, ‘দুপুর দেড়টা পর্যন্ত ওর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আমি বলেছি বাসা থেকে বের না হতে। কিন্তু তারপরেও শেষ রক্ষা হয়নি। তবে পুলিশ আর্মি আগে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকলে এসব হতো না। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের গাফিলতি ছিল কিনা দেখতে হবে।’
আইসিউতে থাকা সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ মামুনের বড় ভাই মোহাম্মদ মাসুদ এ ঘটনায় জড়িতদের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেন।
গুরুতর আহত এই দুই শিক্ষার্থীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবি জানিয়েছেন তাদের সহপাঠীরা।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে হাসপাতালের আহত শিক্ষার্থীদের তদারকি করার দায়িত্বে ছিলেন রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এ. জি. এম. নিয়াজ উদ্দীন।
তিনি টাইমস অব বাংলাদেশকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন চিকিৎসার বিষয়ে সাবক্ষণিক তৎপর ছিল। যেসব শিক্ষার্থীর হাসপাতালে থাকার প্রয়োজন ছিল না, তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস-অ্যাম্বুলেন্সে করে আমরা পাঠিয়ে দিয়েছি। শুরু থেকে আমার সঙ্গে কয়েকজন শিক্ষক ছিলেন। আমরা সব ধরনের প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করেছি।’