অর্ধেক চিকিৎসকে বেহাল খাগড়াছড়ি হাসপাতাল

টাইমস ন্যাশনাল
3 Min Read
খাগড়াছড়ি আধুনিক জেলা সদর হাসপাতাল। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
Highlights
  • প্রায় ৬০০ থেকে ৭০০ রোগী প্রতিদিন বহিঃর্বিভাগে চিকিৎসা নেন। আবার অন্তত ২০০-২৫০ জন রোগী এখানে ভর্তি থাকেন। অথচ, সে তুলনায় হাসপাতালটিতে চিকিৎসক এবং জনবল সক্ষমতা সেভাবে নেই বললেই চলে।

খাগড়াছড়ি আধুনিক জেলা সদর হাসপাতাল অর্ধেকেরও কম চিকিৎসক নিয়ে বেহাল দশায় রয়েছে। হাসপাতালটিতে ৫৭ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও আছেন মাত্র ১৮ জন। ২০২৪ সালে ১০০ শয্যা থেকে ২৫০ শয্যায় উন্নীত করা এই হাসপাতাল এখনো ৫০ শয্যার লোকবল দিয়েই চলছে।

খাগড়াছড়ির মানুষের চিকিৎসার অন্যতম অবলম্বন এই হাসপাতালে নয়জন চিকিৎকের পদ শূন্য। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের প্রায় সব পদই খালি থাকায়, চোখ, নাক, গলা, মেডিসিন, সার্জারি ও প্যাথলজি বিশেষজ্ঞ নেই। নার্স ও অন্যান্য জনবলও কম থাকায় চাপে থাকতে হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।

রোগী বেশি থাকায় চিকিৎসাসেবা দিতে রীতিমত হিমশিম খেতে হয় চিকিৎসকদের। চিকিৎসক কম থাকায় চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা পড়েন চরম ভোগান্তিতে। দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসক সংকটে ধুঁকতে থাকা এই হাসপাতালে বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জামাদিরও অভাব রয়েছে।

জেলার মানুষদের প্রধান এই চিকিৎসাসেবা কেন্দ্র প্রায়ই রোগীর চাপে বেসামাল থাকে। শুধু খাগড়াছড়ি নয়, যোগাযোগ ব্যবস্থা সুবিধা হওয়ায় রাঙামাটির বাঘাইছড়ি ও লংগদু উপজেলার রোগীরাও এখানে আসেন। প্রায় ৬০০ থেকে ৭০০ রোগী প্রতিদিন বহিঃর্বিভাগে চিকিৎসা নেন। আবার অন্তত ২০০-২৫০ জন রোগী এখানে ভর্তি থাকেন। অথচ, সে তুলনায় হাসপাতালটিতে চিকিৎসক এবং জনবল সক্ষমতা সেভাবে নেই বললেই চলে। এ অবস্থায়, হাসপাতালে আসা রোগীরা সময়মত চিকিৎসা পান না বলে অভিযোগ করেছেন রোগীর স্বজনরা। সেবার মান নিয়েও রয়েছে নানা প্রশ্ন।

এ বিষয়ে, দীঘিনালা কামাকু ছড়া থেকে আসা বিমল কান্তি চাকমা ও বোয়ালখালী মো. সোহেল রানা বলেন, ‘তিনি তার ছেলেকে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে এসেছেন সকাল সাড়ে ৯টায় কিন্তু বেলা ১১টা বাজার পরেও তিনি ডাক্তার দেখাতে পারেননি।’

একি কথা পানছড়ি মির্জা টিলা থেকে আসা কিরন চাকমারও। তিনি পানছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে না গিয়ে আরো ভালো চিকিৎসা জন্য এখানে এনেছেন তার স্ত্রীকে। কিন্তু দীর্ঘ প্রায় দুই ঘন্টা বসে থাকার পরও ডাক্তার দেখাতে পারেননি।

তাদের দাবি খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতালে যেন অন্তত ডাক্তারের সংখ্যা বাড়ানো হয়। কারণ, অনেকের পক্ষেই প্রাইভেট ক্লিনিক বা চট্টগ্রাম-ঢাকা গিয়ে চিকিৎসা করানো সম্ভব না।

জনবল সংকটের কথা স্বীকার করে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. রিপল বাপ্পি চাকমা বলেন, ‘চিকিৎসক তুলনামূলক কম থাকায় কর্মরত প্রত্যেক চিকিৎসককে দৈনিক ৮০ জনের বেশি রোগী দেখতে হয়। তাই আন্তরিকতা থাকলেও অনেক সময় রোগীদের যথাযথভাবে চিকিৎসাসেবা দিতে না পারার কষ্ট তাদেরও ব্যথিত করে।’

খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন ডা. ছাবের জানান, আপাতত চিকিৎসক সংকট কাটাতে বিভিন্ন উপজেলা থেকে চিকিৎসকদের জেলা সদর হাসপাতালে পদায়ন করা হচ্ছে।

নির্মাণাধীন ভবনের কাজ শেষ হলে চিকিৎসকসহ নতুন জনবল পদায়নের আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *