ময়মনসিংহের কেওয়াটখালী সেতু নির্মাণে সরকার অনুমোদিত (একনেক) নকশা পরিবর্তনের অভিযোগ উঠেছে। এর ফলে ৩ হাজার কোটি টাকা বাজেটের সেতুটি নির্মাণে খরচ দ্বিগুণ হবে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।
রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ‘সদাজাগ্রত ময়মনসিংহ’ নামক একটি নাগরিক সংগঠন এসব অভিযোগ করে। নকশা না মেনে সেতু নির্মাণের ফলে শহরে তীব্র যানজট সৃষ্টি হবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করে সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সংগঠক আবুল কালাম আল আজাদ বলেন, ‘একনেক অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী ৩ হাজর ২৬৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পের কাজ ২০২৫ সালে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও কেওয়াটখালী সেতু নির্মাণের কাজ এখনো নকশা অনুযায়ী শুরু হয়নি। তবে অবৈধ নকশায় কাজ করায় বিভিন্ন স্থাপনাসহ খাল, জলাশয়, কৃষিজমি ধ্বংস করে অতিরিক্ত ৩২ একর ভূমি অধিগ্রহণ এবং ৩০ ফুট উঁচু প্রায় ২ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করতে হচ্ছে বলে মূল বাজেটের অতিরিক্ত ২ থেকে ৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে।‘
তিনি আরও অভিযোগ বলেন, ‘২০২১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর একনেক অনুমোদিত নকশায় কেওয়াটখালী স্টিল আর্চ ব্রিজ নির্মার্ণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নকশা অনুযায়ী মূল ব্রিজের দৈর্ঘ্য ৩২০ মিটার এবং উভয় পাশে ৫ দশমিক ১ কিলোমিটার সংযোগ সড়কসহ মোট প্রকল্পের দৈর্ঘ্য ছিল ৬ দশমিক ২ কিলোমিটার। কিন্তু বাস্তবায়ন করতে গিয়ে সযোগ সড়ক বাড়িয়ে ৮ দশমিক ২ কিলোমিটার করা হয়েছে, যা একনেক অনুমোদনের বাইরে।’
মূল নকশা পরিবর্তন করে নগরীর শম্ভুগঞ্জ চায়না মোড়ে প্রায় ২ হাজার ৩০০ মিটার বাঁকা ইংরেজি ‘ইউ’ আকৃতির একটি সড়কের নির্মাণকাজ চলছে। অস্বাভাবিক বাঁকা এ সড়ক গিয়ে মিশেছে পুরোনো চায়না সেতুর সংযোগ সড়কে। দুটি সেতুর সংযোগ সড়ক এক হওয়ায় পুরো ময়মনসিংহ নগরী ও আশপাশের এলাকায় ভয়াবহ যানজট সৃষ্টির আশঙ্কাও জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও অভিযোগ করা হয়, সেতুটি নির্মাণের পেছনে একাধিক আবাসন প্রকল্প ও দুর্নীতিবাজ চক্র কাজ করছে।
কেওয়াটখালী স্টিল আর্চ ব্রিজের বিপক্ষে তারা নন জানিয়ে সংগঠনের সদস্যরা দাবি করেন, যেন নকশা বহির্ভূত কাজ বন্ধ করে একনেক অনুমোদিত নকশায় দ্রুত সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সমন্বয়ক হালিমদাদ খান, বাংলাদেশ গাছ রক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক আমিরুল রাজীব, তেতুলতলা মাঠরক্ষা আন্দোলনের নেত্রী সৈয়দা রত্না এবং পরিবেশবাদী নেতা ইবনুল সাইদ রানা।