চট্টগ্রামে পুলিশ কমিশনারের দেওয়া বার্তা ফাঁসের অভিযোগে গ্রেপ্তার কনস্টেবল অমি দাশের সঙ্গে আর কোনো পুলিশ সদস্য জড়িত কিনা, তা অনুসন্ধানে নেমেছে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)।
এরই মধ্যে এই মামলার তদন্তের ভার দেওয়া হয়েছে পুলিশের এই বিশেষায়িত ইউনিটকে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের কাছে অমি দাশকে হস্তান্তরও করেছে খুলশী থানা পুলিশ।
মঙ্গলবার খুলশী থানার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত অমি দাশের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। এরপরই তাকে সিটিটিসিতে হস্তান্তর করা হয়।
চট্টগ্রামের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের ডিসি মো. গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, ‘মামলাটি তদন্তের জন্য আমাদের কাছে দেওয়া হয়েছে। এই চক্রে আর কারা জড়িত, সবকিছু তদন্ত করা হবে।’
অধিকতর তদন্তের জন্য অমি দাশের মামলা কাউন্টার টেররিজম ইউনিটে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান খুলশী থানার ওসি মিজানুর রহমান। সিটিটিসিকে সব ধরনের নথিপত্র বুজিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ‘কৌশলগত পরিকল্পনা ও অসৎ উদ্দেশ্যে ভিডিও রেকর্ডিং করে অমি দাশ অজ্ঞাতনামা সহযোগীদের সহায়তায় তা ফাঁস, পাচার ও প্রকাশ করে। এছাড়া অমি ধারণকৃত ভিডিও অজ্ঞাত সহযোগীদের সহায়তায় ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার, প্রকাশ ও শেয়ার করে নাগরিক নিরাপত্তা ক্ষুণ্ন ও জনমনে ভীতি সঞ্চার করেছে।’
তদন্তে আসামিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সঙ্গে তার যুক্ত থাকার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে বলেও সেখানে উল্লেখ করা হয়।
তার রিমান্ড চেয়ে করা আবেদনে পুলিশ বলেছিল, মামলার মূল রহস্য উদঘাটন, বেতার যন্ত্রের মাধ্যমে দেওয়া সিএমপি কমিশনারের কৌশলগত বার্তা কোন উদ্দেশ্যে ধারণ করে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ ও ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের শনাক্ত করতে অমি দাশকে সাতদিনের জন্য রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।
এর আগে গত রবিবার রাতে অমি দাশকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তার বিরুদ্ধে তথ্য ফাঁসের অভিযোগে মামলা হয়। গ্রেপ্তারের পর সাময়িক বরখাস্তও করা হয় তাকে।
পুলিশের টেলিকম ইউনিটের এই কনস্টেবল প্রেষণে সিএমপির খুলশী থানায় কর্মরত ছিলেন।
গত ১১ আগস্ট রাতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নগরের বন্দর থানার এক কর্মকর্তা আহত হন। এরপর ১২ আগস্ট সিএমপির সব সদস্যের উদ্দেশে ওয়াকিটকিতে একটি বিশেষ বার্তা দেন কমিশনার হাসিব আজিজ। সেই বার্তার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
কমিশনারের ওই বার্তা ফাঁস হওয়ায় অস্বস্তিতে পড়েন চট্টগ্রাম নগরের শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তারা। এর পেছনে কে বা কারা জড়িত, তা তদন্তে নামে পুলিশ। পরে এ ঘটনায় অমি দাশকে গ্রেপ্তার করা হয়।