গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দূরত্ব তৈরি হলে রাষ্ট্র এবং রাজনীতিতে পতিত পলাতক ফ্যাসিস্ট চক্রের পুনর্বাসনের পথ সহজ হয়ে উঠবে বলে মনে করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
তারেক রহমান বলেন, ‘লিখিত বিধিবিধান দিয়ে কখনোই ফ্যাসিবাদ ঠেকানো যায় না। রাষ্ট্র এবং রাজনীতিতে যদি ফ্যাসিবাদ ঠেকাতে হয়, তাহলে অবশ্যই জনগণকে রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী করার বিকল্প নেই।’
মঙ্গলবার ঢাকার চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তারেক রহমান। লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়েছিলেন তিনি।
সরাসরি ভোটের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের অধিকার চর্চার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে জনগণ শক্তিশালী হয়ে উঠে বলেও মত দেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, ‘জনগণ রাজনৈতিকভাবে যদি শক্তিশালী হতে না পারে, তাহলে রাষ্ট্র ও সরকার শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘নির্ধারিত সময় নির্বাচন নিয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর কোনো কোনো নেতার বক্তব্য জনগণের মনে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।’
‘গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনায় রাষ্ট্র এবং রাজনীতিতে জনগণকে শক্তিশালী করা কিংবা প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার প্রতিষ্ঠার অন্যতম মাধ্যম হলো নির্বাচন। সুতরাং নানা শর্ত আরোপ করে জনগণের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার পথে বাধা সৃষ্টি করা হয়, তাহলে গণতন্ত্র উত্তরণের পথ সংকটে পড়বে। যদি গণতন্ত্র উত্তরণের পথ সংকটে পড়ে, যদি রাষ্ট্রে জনগণ তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে না পারে, তাহলে সমগ্রিকভাবে দেশকে সমস্যায় পড়তে হবে।’
তারেক রহমান বলেন, ‘১৯৭১ সাল ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের যুদ্ধ। ২০২৪ সাল ছিল ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা রক্ষা করার যুদ্ধ। গত ৫৪ বছরে দেশের জন্য যারা জীবন দিয়েছেন, তাদের কাছে আমরা ঋণী। ফ্যাসিস্টবিরোধী সব শক্তির মধ্যে নিত্য-নতুন ইস্যুতে বিতর্কে জড়িয়ে পড়া শহীদদের আত্মত্যাগের অবমাননা বলে মনে করি। ’
বিএনপির আগামী দিনের রাজনীতি জনগণের জীবনমান উন্নয়নের রাজনীতি হবে উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘দেশের ভেতরে বা বাইরে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা আমাদের মূল লক্ষ্য থাকবে। শুধু কর্মসংস্থান নয়, কর্মসংস্থানের পাশাপাশি নিরাপদ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করাও হবে আমাদের রাজনীতি।’
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের (এআই) যুগে সময়ের চাহিদার দিকে লক্ষ্য রেখে বিএনপি সুনির্দিষ্ট ও সুচিন্তিত পরিকল্পনা নির্ধারণ করছে বলেও জানান তিনি।
আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বেগম সেলিমা রহমান, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব, রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন-নবী খান সোহেলসহ অন্যরা।