নূরুল হুদাকে হেনস্তায় যুবক আটক

টাইমস রিপোর্ট
3 Min Read
নুরুল হুদাকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় জামিন পেয়েছেন তিন আসামি। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর উত্তরায় সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদাকে আটকের সময় ‘মব’ সৃষ্টির জন্য অভিযুক্ত এক যুবককে আটক করা হয়েছে। আটক হানিফ মিয়া বিএনপির অঙ্গ সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক দলের উত্তরা পশ্চিম থানা কমিটির সদস্য সচিব বলে জানা গেছে।

সোমবার রাতে উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাফিজুর রহমান টাইমস অব বাংলাদেশকে বলেন, ‘যারা মব তৈরি করেছিল তাদের শনাক্ত করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলাও হবে।’

তিনি এ ঘটনায় এক যুবককে আটকের তথ্য শুনেছেন বলে জানান।

ওসি হাফিজুর বলেন, ‘আমরা কাউকে আটক করিনি। তবে শুনেছি অন্য একটি সংস্থা একজনকে আটক করেছে।’

আটক হানিফ মিয়াকে মধ্যরাতের দিকে সেনাবাহিনীর একটি টিম পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে বলে জানা গেছে।

জানা যায়, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদাকে আটকের সময় মব সৃষ্টির অভিযোগে উত্তরা পশ্চিম থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব হানিফ মিয়াকে আটক করে সেনাবাহিনী।

সোমবার সকালে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. মহিদুল ইসলাম টাইমস অব বাংলাদেশকে বলেন, ‘মব সৃষ্টিকারীদের আমরা খুঁজছি। সেখানকার আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ আমরা যাচাই-বাছাই করছি।’

রোববার সন্ধ্যায় কে এম নূরুল হুদার বাসায় ঢুকে ‘মব’ তৈরি ও তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ তাকে আটক করে উত্তরা পশ্চিম থানা হেফাজতে নেয়। সেখান থেকে তাকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানার ৫ নম্বর সেক্টরে এ ঘটনার শিকার হন তিনি। এ ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।

রোববার সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে সরকার জানায়, ‘নূরুল হুদাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা বেআইনি, আইনের শাসনের পরিপন্থী এবং একটি ফৌজদারি অপরাধ। যারা ‘‘মব’’ গঠন করে আইন নিজের হাতে তুলে নিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।’

রোববার সন্ধ্যায় উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি হাফিজুর রহমান জানিয়েছিলেন, ‘জনতা’ প্রথমে সাবেক সিইসিকে ঘেরাও করে এবং তার ওপর চড়াও হয়। জনতা তাকে ঘিরে রাখে, পরে পুলিশ গিয়ে হেফাজতে নেয়।

এসব ঘটনা যখন ঘটছিল তখন ঘটনাস্থল থেকে কেউ কেউ ফেসবুক লাইভ করেন। লাইভ ভিডিওতে দেখা যায়, কে এম নূরুল হুদার গলায় জুতার মালা পরিয়ে, গেঞ্জির কলার ধরে টেনে কয়েকজন হেনস্তা করছেন। একজন জুতার মালা থেকে জুতা খুলে তাকে মারধর করেন। এসব ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

এর আগে, রোববার দুপুরে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব ‘পালন না করে’ উল্টো ‘ভয়-ভীতি দেখিয়ে’ জনগণের ভোট ছাড়াই নির্বাচন সম্পন্ন করার অভিযোগে মামলা করে বিএনপি। শেরেবাংলা নগর থানায় করা ওই মামলায় নূরুল হুদাসহ ১৯ জনকে আসামি করা হয়।

নূরুল হুদা ২০১৭ সালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে শপথ নেন। তার নেতৃত্বাধীন কমিশনের অধীনে ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত হয় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *