দীর্ঘ ২০ বছর পর শুরু হতে যাচ্ছে শিশু-কিশোরদের জনপ্রিয় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ‘নতুন কুঁড়ি’। বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) আয়োজনে ২০২৫ সালের ১৭ আগস্ট এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম।
আধুনিক কাঠামোয় সাজানো হয়েছে এবারের নতুন কুঁড়ি। এবার ১৯টি অঞ্চলে বাছাইপর্বের মাধ্যমে প্রতিযোগী নির্বাচন করা হবে। ছয় থেকে ১৫ বছর বয়সী শিশু-কিশোররা অংশ নিতে পারবে ‘ক’ ও ‘খ’ দুই বিভাগে। প্রতিযোগিতাটি গান, অভিনয়, আবৃত্তি, নৃত্য, কৌতুক, গল্প বলাসহ মোট ১২টি বিভাগে ভাগ করা হয়েছে।
বিটিভির মহাপরিচালক মাহবুবুল আলম এটিকে ‘সাংস্কৃতিক জোয়ার’ বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘নতুন কুঁড়ি কেবল একটি প্ল্যাটফর্ম নয়, এটি একটি জাতীয় সাংস্কৃতিক আন্দোলন। এটি সারাদেশের শিশু-কিশোরদের শিল্প-সংস্কৃতির চর্চায় যুক্ত করবে এবং প্রযুক্তির আসক্তি থেকে ফিরিয়ে আনবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নতুন কুঁড়িকে জাতীয় পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন রাজনৈতিক জটিলতায় অনুষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে যায়, যা খুবই দুঃখজনক। তবে এখন আমরা নতুন করে পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছি, যাতে এই অনুষ্ঠান নিয়মিতভাবে হয়। আগামীর প্রতিভাবান প্রজন্ম সামনে চলে আসে।’
আশাবাদ ব্যক্ত করে বিটিভির মহাপরিচালক বলেন, ‘আমরা চাই নতুন কুঁড়ি আগামী শত বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে হোক। প্রতিভা যেন হারিয়ে না যায়, বরং উৎসাহ পায়। এই অনুষ্ঠান আমাদের সংস্কৃতির স্রোতধারাকে প্রবাহিত রাখবে।’
বার্তা সংস্থা বাসস জানায়, ১৯৭৬ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং মোস্তফা মনোয়ারের উদ্যোগে যাত্রা শুরু করে অনুষ্ঠানটি। ‘নতুন কুঁড়ি’র প্রথম আয়োজনেই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে নয় হাজারের বেশি খুদে শিল্পী অংশ নিয়েছিল। তাদের অনেকেই পরে স্থানীয় সাংস্কৃতিক সংগঠন ও প্রশিক্ষণকেন্দ্রে সক্রিয় থেকেছেন।
এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কনকচাঁপা, তিশা, শাওন, আজাদ রহমান শাকিলসহ অসংখ্য গুণী শিল্পীর সূচনা হয়েছে। ২০০৬ সালে অনুষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর দীর্ঘদিন ধরে শিশু-কিশোরদের জন্য জাতীয় পর্যায়ে কোনো সাংস্কৃতিক প্ল্যাটফর্ম ছিল না।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অনুষ্ঠানটির উদ্দেশ্য কেবল জাতীয় পর্যায়ে শিল্পী তৈরি করা নয়। বরং দেশব্যাপী সংস্কৃতিমনা মানুষ তৈরির মাধ্যমে জাতির সাংস্কৃতিক ভিত্তিকে মজবুত করা।