শিক্ষার্থীরা তালা ভেঙে হলে প্রবেশ করে বিশ্ববিদ্যালয় তথা দেশের আইন লঙ্ঘন করেছেন বলে মন্তব্য করেছে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) প্রশাসন।
সংবাদ সংস্থা ইউএনবি জানায়, মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) কুয়েটের জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা বিভাগের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য উল্লেখ করেছে। এতে শিক্ষার্থীদের দেশের প্রচলিত আইন ও সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান ও আস্থা রাখার আহ্বান জানায় প্রশাসন। তাছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্ট দেখে বিভ্রান্ত না হতে শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা।
এর আগে মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বেলা পৌনে ২টার দিকে কুয়েট স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। পরে বিকাল ৩টার দিকে তালা ভেঙে হলে প্রবেশ করেন তারা।
এ ঘটনার পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, তালা ভেঙে হলে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম ভঙ্গ করেছেন। তাছাড়া এ ধরনের কাজ প্রচলিত আইনেরও পরিপন্থি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধকে কেন্দ্র করে সংঘটিত সংঘর্ষের ঘটনায় যে ৩৭ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে, তাদের নাম কোথাও প্রকাশ করা হয়নি।
তাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ধরণের বিভ্রান্তিকর নামের তালিকা ও সংখ্যা দেখে উত্তেজিত না হতে শিক্ষার্থীদের সতর্ক করেছে প্রশাসন।
এ বিষয়ে তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের প্রতি ভরসা রাখার আহ্বান জানিয়েছে প্রশাসন।
প্রসঙ্গত, ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি নিয়ে বিরোধের জের ধরে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েট ক্যাম্পাসে সংঘর্ষ হয়। এতে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। এ ঘটনার পর ২৫ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত একাডেমিক কার্যক্রম ও আবাসিক হলগুলো বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।
তবে গত কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রবিবার দুপুর(১৩ এপ্রিল) ২টায় বন্ধ থাকা কুয়েট ক্যাম্পাসে ঢুকে হলে উঠার ঘোষণা দিয়ে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা।
ঘোষণা অনুযায়ী, অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম শুরু ও হল খুলে দেওয়ার দাবিতে রবিবার দুপুর থেকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে শিক্ষকরাও সেখানে যান। এরপর দুপক্ষের আলোচনা শেষে আইডি কার্ড যাচাই করে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়।
এরপর, সোমবার (১৪ এপ্রিল) রাতে কুয়েট সিন্ডিকেটের জরুরি সভা শেষে ঘোষণা দেওয়া হয়, অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ শিক্ষা কার্যক্রম আগামী ৪ মে থেকে শুরু হবে এবং আবাসিক হলগুলো খুলবে ২ মে।
তার আগে, গত ১৮ ফেব্রুয়ারির সংঘর্ষের ঘটনায় ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এই বহিষ্কারাদেশের প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। তারা শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার এবং প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। একই সঙ্গে দ্রুত সময়ের মধ্যে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু ও হল খুলে দেওয়ার দাবিও জানান তারা।