দেশের মানুষকে জোর করে ইভিএম খাওয়ানো যায়নি, পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধি) পদ্ধতিও খাওয়ানো যাবে না বলে মন্তব্য করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
তিনি বলেন, ‘এই দেশের লোককে ইভিএম পদ্ধতি খাওয়াতে চেয়েছিল হাসিনা, এ দেশের লোক গেলেনি। সুতরাং আপনাদের পিআর পদ্ধতিও কেউ গিলবে না, এই কথা মনে রাইখেন।’
শুক্রবার সন্ধ্যায় যাত্রাবাড়ীর শহীদ ফারুক রোডে আয়োজিত এক সমাবেশে মির্জা আব্বাস এ কথা বলেন। ‘চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে’ এ সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি।
দেশের মানুষ এখনো পিআর পদ্ধতি সম্পর্কে জানেন না বলে সমাবেশে উল্লেখ করেন মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, ‘আমরা তো এখন পর্যন্ত ভোট দেওয়া শিখলাম না। আমাদের ১৫ বছরে আমাদের নতুন প্রজন্ম…আমরা যারা পুরোনো আছি, আমরা ভোট দেওয়া ভুলে গেছি। নতুন প্রজন্ম ভোট দিতে শেখেনি। আর তাদের আপনারা পিআর শেখান! আগে ভোট দেওয়া শেখান, পরে পিআরের কথা বলেন। নতুন নতুন কথা বলে দয়া করে জনগণকে বিভ্রান্ত করবেন না।’
তিনি বলেন, ‘পিআর পদ্ধতির পেছনে অন্য উদ্দেশ্য আছে। এই পিআর পদ্ধতির পেছনে উদ্দেশ্য হলো, কেউ বলল করব, কেউ বলল করব না; অর্থাৎ একপর্যায়ে বলবে, এ কারণে নির্বাচন হচ্ছে না। সুতরাং আরও কিছুদিন সময় বাড়িয়ে দিতে হবে।’
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘এ সমস্ত বাঁদরামি–ফাজলামি ছাড়েন। এগুলো ছাড়েন। এই দেশের লোক যে পদ্ধতিতে ভোট দিয়ে অভ্যস্ত, সেই পদ্ধতিতেই ভোট হবে।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন দিতে এত গড়িমসি কেন, আমি বুঝতে পারি না। আমি একটা জিনিস বুঝতে পারি, জাস্টিস ডিলেইড, জাস্টিস ডিনাইড; অর্থাৎ বিচারক যদি দেরি করেন বুঝতে হবে, বিচারক রায় ভালো দেবেন না।’
‘আর দেরি করবেন না। আমরা জানি, আপনারা ঘোষণা দেবেন, তারিখ ঘোষণা দেবেন, এর পেছনে আপনাদের আবার কোন ষড়যন্ত্রতত্ত্ব লুকিয়ে আছে, আল্লাহই বলতে পারবেন। আর কারো না হোক, আমি অনেক সন্দেহ করি। তাদের নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পেছনেও অনেক ষড়যন্ত্র আছে। এরপরও ষড়যন্ত্র আছে,’যোগ করেন তিনি।
মির্জা আব্বাস আরও বলেন, ‘আমি এখনো মনে করি, নির্বাচন সুষ্ঠু হতে না দেওয়ার জন্য যত প্রক্রিয়া আছে, তারা সেটা করার চেষ্টা করবে। মানুষকে তারা বোঝাবে, বিএনপির বিরুদ্ধে ভুল বোঝাবে। কিন্তু বিএনপি ১৭টা বছর আন্দোলন করেছে। দরকার হলে আরও ১৭ বছর আন্দোলন করব, কোনো সমস্যা নেই আমাদের।’
জামায়াতকে ইঙ্গিত করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘তারা বিএনপি যেটা বলে, তার উল্টোটা করতে চায়। সব সময়। অথচ কোনো দিন দেশের মন্ত্রী-মিনিস্টার হওয়ার স্বপ্ন তারা দেখতে পারেনি। এরা একটা পরগাছার মতো অনেকটা। কখনো আওয়ামী লীগের ঘাড়ে পাড়া দিয়ে মন্ত্রী হয়, আবার কখনো বিএনপির ঘাড়ে সওয়ার হয়ে মন্ত্রী হয়। এখন সওয়ার হয়েছে এনসিপির ঘাড়ে। কোনো লাভ হবে না।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম সভায় সভাপতিত্ব করেন। সদস্যসচিব তানভীর আহমেদ সভা সঞ্চালনা করেন। সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান, বিএনপির বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমেদ, স্বেচ্ছাসেবক–বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী, ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক নবী উল্লাহ নবী, জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সদস্য ইশরাক হোসেন, জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, যুবদলের সভাপতি আবদুল মোনায়েম, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম প্রমুখ।