জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ মো. সাগর হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া সাবেক এমপি ও সংগীত শিল্পী মমতাজ বেগমকে চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
মঙ্গলবার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, মিরপুর মডেল থানার উপপরিদর্শক মনিরুল ইসলাম মমতাজের সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করেন। দুপুরে শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুয়েল রানার আদালত এ রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন।
এর আগে সোমবার রাতে রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে গ্রেপ্তার করা হয় মমতাজকে।
আদালতের সেরেস্তা সূত্র জানায়, গত ১৯ জুলাই মিরপুর-১০ নম্বর সেকশনের গোল চত্বর এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেন মো. সাগর। ওইদিন বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে আসামিরা আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা ও গুলিবর্ষণ করেন। এ সময় সাগরের বুকে গুলি লাগে।
পরে তার মা বিউটি আক্তার তাকে খুঁজতে থাকেন। এক পর্যায়ে ওইদিন দিবাগত রাত ৩টায় মিরপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার মৃতদেহের সন্ধান পান তিনি। পরে সন্তানের মৃতদেহ গ্রহণ করে গ্রামের বাড়িতে দাফন করেন বিউটি।
এ ঘটনায় গত ২৭ নভেম্বর তিনি বাদী হয়ে মিরপুর মডেল থানায় মামলা করেন। এ মামলায় শেখ হাসিনাসহ ২৪৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। মামলায় আরো ২৫০-৪০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। এ মামলার মমতাজ বেগম ৪৯ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি।
পুলিশ জানিয়েছে, এছাড়া ২০১৩ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি হরতালের সমর্থনে মানিকগঞ্জ-সিঙ্গাইর-হেমায়েতপুর সড়কের গোবিন্দল নতুন বাজার এলাকায় মিছিল বের করেন ইসলামী সমমনা দলগুলোর নেতা-কর্মীরা। এতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ছোড়া গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে বাদীর ছেলে নাজিম উদ্দিন মোল্লাসহ চারজন নিহত হন। নিহত অন্য তিনজন হলেন গোবিন্দল গ্রামের মাওলানা নাসির উদ্দিন, আলমগীর হোসেন ও শাহ আলম।
এ ঘটনায় ২০২৪ সালের ১০ আক্টোবর মমতাজ বেগম ও ৩৭ পুলিশ সদস্যসহ ৯০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৬০ জনকে আসামি করে মানিকগঞ্জ আদালতে দায়ের হয়েছে একটি হত্যা মামলা।
অন্যদিকে, গত বছরের ২৩ অক্টোবর মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর থানায় মমতাজ বেগম, দেওয়ান জাহিদ আহমেদসহ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের ১০৯ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে হয়েছে আরেকটি হত্যা মামলা। সিঙ্গাইরে প্রায় এক যুগ আগে হরতালের মিছিলে পুলিশের গুলিতে চারজন নিহত হওয়ার ঘটনায় দায়ের হওয়া এ মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে করা হয় আসামি।